তিমির বনিক, মৌলভীবাজার থেকে: মৌলভীবাজার জেলা কুলাউড়া উপজেলার গুগালীছড়া নদীতে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার পার করতে হয় স্থানীয় লোকজনের।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় একটি সেতুর অভাবে চরম দুর্ভোগে চারটি গ্রামের মানুষকে। দীর্ঘদিন বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার পার করতে হচ্ছে তাদের।
জয়চণ্ডী ইউনিয়নে অবস্থিত গুগালীছড়া নদী। আর এই নদীতে একটি সেতুর দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। এত দিন সেই দাবি শুধু আশ্বাসেই মধ্যে দিয়ে সীমাবদ্ধ ছিল ইউনিয়ন বাসীর চাহিদা। অবশেষে ওই এলাকায় একটি সেতু হচ্ছে। সম্প্রতি অনুমোদন মিলেছে। শেষ পর্যন্ত চাহিদা আর সেই স্বপ্নের সেতু হচ্ছে, শেষ হচ্ছে অপেক্ষার প্রহর।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র মতে জানা গেছে, গুগালীছড়া নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে গত বছর সেতুর চাহিদা দেন কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী। সম্প্রতি আবুতালিবপুর-মিঠুপুর এলাকায় গুগালীছড়া নদীর উপর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যর একটি সেতুর অনুমোদন দেয়। ইতিমধ্যে সেতুর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
সেতুর অভাবে দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে স্থানীয় গ্ৰামবাসীর মধ্যে ফারুক আহমদ, দেওয়ান খাঁ, রজব আলী, নিয়াজ আহমদ, আতাউর রহমান, ইমরান হোসেন বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই মিঠুপুর, আবুতালিবপুর, বেগমানপুর ও নুরপুর এলাকার বাসিন্দারা গুগালীছড়া নদীর ওপর একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলো। জনপ্রতিনিধিদের কাছে একাধিকবার ধরনা দিয়ে অনুরোধ করেছেন এলাকাবাসী। কিন্তু ৫০ বছর ধরে আশ্বস আর আশ্বাস এর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল ও সে দাবি শুধু আশ্বাসেই রয়ে গেছে। সেতু না থাকার কারণে কেউ অসুস্থ হলেও অ্যাম্বুলেন্স এবং গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। প্রবেশ পথ না থাকায় দুর্ভোগ সয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়েই নদী পারাপার হতে হয় তাঁদের। গ্রামের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় চরম রকমের বিপাকে। বয়স্কদের জন্য বাঁশের সাঁকো যেন মরণফাঁদ।
তাঁরা আরও বলেন, প্রতি বছর বর্ষায় নদী দিয়ে পাহাড়ি ঢল নেমে পানি বেড়ে গেলে সে বাঁশের সাঁকোতেও চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমে দিয়ে সেটি মেরামত করে দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছিলো। এভাবেই দুর্ভোগ জেনে নিয়ে চলাচল করতে হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
অবশেষে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি বাস্তবে রূপ নিয়েছে। সেতুটি নির্মাণ হলে এলাকার মানুষের কষ্ট লাঘব হবে বলেন তাঁরা।
সার্বিক বিষয়ে কুলাউড়া ইউএনও এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘একটি সেতুর অভাবে জয়চণ্ডীর ৪টি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি আমরা জানতে পারি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় একটি পাকা সেতুর চাহিদা দাবি দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে একটি পাকা সেতু ওই এলাকায় নির্মাণের অনুমোদন পেয়েছি। শিগগিরই সেতুর কাজ শুরু হবে বলে নিশ্চিত করেন।