বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যে কুয়েতে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম কথিত হোতা আমির হোসেন ওরফে সিরাজ উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার (১৯ আগস্ট) সিআইডি থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৭ আগস্ট সিআইডির একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে নরসিংদীর মাধবদী থেকে আমীর হোসেন ওরফে সিরাজউদ্দিনকে গ্রেফতার করে।
বিদেশি একটি গোয়েন্দা রিপোর্টে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, চার জন কুখ্যাত মানবপাচারকারী দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার করে আসছিল। এ চক্রের সদস্যদের হাতে ৯ শতাধিক ভিকটিম কুয়েতে পাচারের শিকার হয়। জন প্রতি ছয় লাখ বা তার বেশি টাকার বিনিময়ে তারা ভিকটিমদের কুয়েতে পাচার করে। উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে কুয়েতে পাচারের পর ভিকটিমদের ওপর নেমে আসে দুর্বিষহ জীবন। প্রতারিত বাংলাদেশি নাগরিকরা কুয়েতে কোনও কাজের সন্ধান পাননি। বরং সেখানে খাদ্য ও বাসস্থান সংকটে উদ্বাস্তু অবস্থায় কুয়েতের রাস্তায়- রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে হয় তাদের।
চক্রটি কুয়েতে ভিকটিমদের বন্দি করে তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ গ্রহণ করে। এছাড়া জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে উল্লেখিত ভিসাগুলো নেওয়া হয়েছে মর্মে সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়।
এদের মধ্যে কয়েকজন ভিকটিম কুয়েতের সরকারি এজেন্সি ও জনশক্তি কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করলে তারা বিষয়টি তদন্ত শুরু করে। কুয়েত এজেন্সি তদন্তে চক্রটির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায় এবং অভিযোগের ভিত্তিতে কুয়েতের আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয়। পরবর্তীতে এ চক্রের এক কুয়েতি ও তিন বাংলাদেশি সদস্যের বিরুদ্ধে কুয়েতের আদালত অভিযোগ আমলে নেয়।
ইতোমধ্যে উল্লেখিত আদালত তিন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে তিন বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। এ চক্রের অন্যতম সদস্য সেই কুয়েতি নাগরিক ছয় বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কুয়েতে কারা ভোগ করছে। তবে বাংলাদেশি তিন মানব পাচারকারী দেশে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
এ বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পাশাপাশি এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য সিআইডির প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলেও জানানো হয়েছে।