আবু তালহা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নে সরকারি নিবন্ধিত নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) লাইসেন্স ছাড়াই কাজী সেজে বাল্য বিবাহ দেওয়া সহ অবৈধ কার্যক্রম চালাচ্ছে কথিত জামাত নেতা আব্দুল ওহাব। তার খপ্পরে পরে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে নব দম্পতি ও তাদের পরিবার।
বর্তমানে উপজেলায় সরকারি নিবন্ধিত ৪ জন নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) রয়েছে তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক কোন ছেলে-মেয়ের বিয়ে না পড়ানোর সুযোগ কাজে লাগিয়ে আসছে এই সকল কথিত কাজীরা। প্রশাসনের তেমন নজরদারি না থাকায় এমন সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে কথিত কাজীরা বলে মনে করেছেন সাধারণ মানুষ।
এছাড়াও নিবন্ধিত প্রতিটি কাজীকে নিজ নিজ ইউনিয়নের মধ্যে বিয়ে পড়ানোর জন্য বলা হলেও কথিত কাজী আব্দুল ওহাব অবৈধভাবে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বিয়ে পড়ান। গত শুক্রবার সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের ধুকুরিয়া গ্রামের রাশিদুল ইসলামের মেয়ে মিম খাতুন (১৩) কে বাল্য বিবাহ পড়ানোর অভিযোগ উঠে কথিত কাজী আব্দুল ওহাবের বিরুদ্ধে। এই বিষয়টি সামনে আসতেই তার অবৈধ কার্যক্রম প্রকাশ্যে আসে।
বিষয়টি নিয়ে আব্দুল ওহাবের সাথে কথা হলে তিনি জানান আমার কোন নিজস্ব লাইসেন্স নাই। তবে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার নলকা ইউনিয়নের মোঃ হাকিম কাজীর সাথে বিয়ে পড়াই মাঝে মধ্যে তার বই দিয়ে নিজেদের আত্মীয় স্বজনের বিয়ে পড়িয়ে থাকি। এছাও তিনি আরও বলেন আইন ধরলে অনেক না ধরলে কিছুই না। বাল্য বিবাহ যে আমি পড়িয়েছি তানা চুপিচুপি কমবেশি সবাই পড়ায় বলে তিনি দাবি করেন।
নলকা ইউনিয়নের মোঃ হাকিম কাজীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন তাকে আমি চিনি সে বিয়ে পড়ায় তবে তাকে আমার বই দেইনা সে ভদ্রঘাট ইউনিয়নের আক্তার উজ্জামান কাজীর কাগজ দিয়ে কাজ করে। আক্তার উজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমার ইউনিয়নে আমি কাজ করি আমি তাকে কেন আমার বই দিয়ে কাজ করাব। আমার ইউনিয়নে আমার কাজগুলো অবৈধভাবে অন্য জনের বই দিয়ে সে নাবালক দের বিয়ে পড়ায়।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের কাজী আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ করে বলেন, আমি নাবালক দের বিয়ে পড়াই না কিন্তু আব্দুল ওহাব অবৈধভাবে আমার ইউনিয়নের সেই বিয়ে গুলো পড়িয়ে থাকে।
সিরাজগঞ্জ জেলা নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমাদের নিবন্ধন করা কোন কাজীর থেকে রেজিস্টার বই নিয়ে সে বিয়ে পড়াতে পারবে না। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ যদি কেই আমাদের নিবন্ধতি কাজী ছাড়া বিয়ে পড়ায় পরবর্তীতে দম্পতিরা ঝামেলায় পড়ে।
এবিষয়ে কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুমা খাতুন জানান, এটা শাস্তি যোগ্য অপরাধ। বিয়ের রেজিস্ট্রি যদি মুল বইয়ে না ওঠে তাহলে তার দ্বারা মানুষ প্রতারিত হচ্ছে।