পাবনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটিতে রাজাকারের সন্তানকে অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। পরে তীব্র সমালোচনার মুখে কমিটি থেকে বিতর্কিত খাইরুল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক কমিটির সুপারিশে পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার আহবায়ক মাসুদ রানা এবং যুগ্ম আহবায়ক সজিব মালিথা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঈশ্বরদীর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধারা জানান, দীর্ঘদিন পর ৩১ জুলাই ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। মাসুদ রানাকে আহবায়ক ও সজিব মালিথাকে যুগ্ম-আহবায়ক করে ২০ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে দলে অনুপ্রবেশের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, ঘোষিত কমিটির ৮ নম্বর সদস্য খাইরুল ইসলামের বাবা ঈশ্বরদীর চিহ্নিত রাজাকার আবুল হোসেন।
পরে বিষয়টি ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র ইছাহক আলী মালিথা, স্থানীয় এমপি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাসকে জানিয়ে প্রতিকার দাবি করেন। একই সঙ্গে যারা খাইরুল ইসলামের মতো রাজাকার পরিবারের সন্তানকে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনে যুক্ত করেছেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার আহবায়ক মাসুদ রানা জানান, কমিটিতে খাইরুল ইসলামের নাম আসায় চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পরে তার বিষয়ে সুপারিশ করা হলে জেলা কমিটি তাকে অব্যাহতি দেয়।
কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক সজিব মালিথা জানান, দীর্ঘদিন পর কমিটি ঘোষণা করায় দলের মধ্যে হাইব্রিডদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। খাইরুল ইসলাম মৃত রাজাকার আবুল হোসেনের ছেলে জানার পর তাকে পাবনা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ পাবনার সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন জানান, ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক এক মেয়রের সুপারিশে রাজাকারের ছেলে খাইরুল ইসলাম কমিটিতে স্থান পান। জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে ঈশ্বরদীতে কমিটি দেওয়া আমাদের ভুল হয়েছে। রাজাকারের ছেলে কমিটিতে থাকায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
পাবনা-৪ আসনের এমপি মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, শুধু আবুল হোসেন রাজাকারের ছেলে খাইরুল ইসলামই আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেনি, ঈশ্বরদীতে রাজাকারের অনেক ছেলেই দলের বিভিন্ন পদ দখল করেছে। আওয়ামী লীগ থেকে রাজাকার পরিবারের সদস্যদের বহিষ্কার করতে তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। দলে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের কেউ থাকতে পারবে না বলে জানান তিনি।