ইরানে ‘নৈতিকতা পুলিশের’ হেফাজতে মাশা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চলমান বিক্ষোভের বিরুদ্ধে পাল্টা সমাবেশ করেছেন সরকার সমর্থকেরা। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানী তেহরানে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেয় হাজার হাজার মানুষ। ইরানের জাতীয় পতাকা নিয়ে নানারকম স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন মিছিলকারীরা।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে জানা যায়, সরকার সমর্থকেরা মিছিলে অংশ নিয়ে বিদেশিদের বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের মদদে বিক্ষোভের নামে দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
পুলিশসহ ইরানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ঘোষণা করে মিছিলকারীরা বলেন, জনগণের জানমাল রক্ষা করতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রাণপণে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে। দাঙ্গাকারীরা ইরানে হিজাবের বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যেকোনো নারীকে প্রকাশ্যে হিজাব পরতে হবে। দাঙ্গাবাজ ও দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মিছিলকারীরা।
উল্লেখ্য, হিজাব আইন অমান্য করার অপরাধে ‘নৈতিকতা পুলিশের’ হেফাজতে মাশা আমিনি নামের এক ইরানি নারীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহের সহিংস বিক্ষোভে প্রায় অর্ধশত মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানের ৩০টির বেশি প্রদেশের পাশাপাশি বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিস, জার্মানি, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অনেক দেশে। রাস্তায় নেমে নিজের চুল কাটার পাশাপাশি প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিয়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এ ঘটনার।
১৯৭৯ সাল থেকে ঘরের বাইরে নারীদের হিজাব বাধ্যতামূলক করে ইরান। গত আগস্ট মাসে দেশটি আরও কড়া বিধিনিষেধ নিয়ে নতুন হিজাব আইন পাস করে। এতে অফিস, গাড়ি ও রাস্তার মতো কোনো পাবলিক স্পেয়ার বা জনপরিমণ্ডলে নারীদের একরত্তি চুলও হিজাবের বাইরে আসলে, তা আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।