ইউক্রেনে সরাসরি সামরিক অভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন। অন্যদিকে অ্যামেরিকায় জরুরি বৈঠকে বসেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের অনুরোধে গভীর রাতে শুরু হয়েছে বৈঠক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছেন। অন্যদিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ-সহ একাধিক শহরে বিস্ফোরণ ঘটছে বলে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম।
সংবাদসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার সামান্য আগে ক্রেমলিন একটি বিবৃতি জারি করেছে। সেখানে সরাসরি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের কথা বলা হয়েছে। প্রেসিডেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সেনা অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ টেলিভিশনে এই বিবৃতি প্রকাশ করা হয় বলে এএফপি জানিয়েছে।
পুটিন জানিয়েছেন, পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রক্ষা করতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাকে। বস্তুত, রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেনই পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপর আগ্রাসন চালাচ্ছে। তাদের রক্ষা করতেই রাশিয়াকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হলো। এর আগেই পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদত দিতে সেনা পাঠিয়েছিল রাশিয়া। পুটিনের ঘোষণার পরেই সমস্ত যাত্রীবাহী উড়ান বাতিল করে দেয় ইউক্রেন। এয়ার স্পেস বিমানবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। দেশে জারি হয়েছে মার্শাল আইন। তারই মধ্যে কিয়েভে শক্তিশালী বিস্পোরণ হয়েছে বলে জানা গেছে। রাশিয়া কিয়েভে মিসাইল হামলা চালিয়েছে বলে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যমের দাবি। যদিও পুটিন জানিয়েছিলেন, শুধুমাত্র পূর্ব ইউক্রেনেই আক্রমণ চালানো হবে। সেখানে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে অস্ত্র ফেলে আত্মসমর্পণের কথা বলেছেন তিনি।
এদিকে বুধবার রাতে অ্যামেরিকায় ইউক্রেন সংকট নিয়ে তৃতীয় জরুরি বৈঠকে বসে জাতিসংঘ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির অনুরোধেই দ্রুত বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। অনুরোধে জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, রাশিয়া যে কোনো সময় ‘যুদ্ধ’ শুরু করে দিতে পারে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠক শুরু হয়। জাতিসংঘের প্রধান পুটিনের কাছে হামলা বন্ধ করে শান্তি বৈঠকে বসার অনুরোধ জানান। কিন্তু পুটিন সে কথায় কান দেননি। যুদ্ধঘোষণা করে দিয়েছেন বৃহস্পতিবার সকালে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক শুরু হয়েছে। সেখানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার প্রস্তাব পেশ হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া অন্যতম সদস্য। প্রস্তাবে তারা ভেটো দিলে তা কোনোভাবেই পাশ হবে না বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ঘোষণা গোটা ইউরোপে শান্তির আবহ তৈরি করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।