
আফগানিস্তানের নারী স্বাস্থ্যকর্মীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরতে বলেছে সম্প্রতি দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া তালেবান। সশস্ত্র সংগঠনটি গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে আফগান নারীদের প্রতি এ আহ্বান জানায়। অনেক প্রশিক্ষিত ও শিক্ষিত আফগান দেশ ছেড়ে পালানোর কারণে আফগানিস্তানে জনসেবা খাতে ক্রমেই চাপ বাড়ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তালেবানের বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে কর্মরত নারীদের কর্মস্থলে ফিরে যেতে বাধা নেই। যদিও কদিন আগেই তালেবান আফগান নারীদের কর্মস্থলে যেতে নিরুৎসাহিত করে, এমনকি নারীদের কর্মস্থল থেকে ফিরিয়েও দেয়। যে কারণে আশঙ্কা তৈরি হয়—তালেবান এর আগে ২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে যেমন নারীদের ঘরের বাইরে কাজ করার অনুমতি দেয়নি, এবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে।
কিন্তু, আফগানিস্তানের ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বর্তমানে কর্মী সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় নিজেদের অবস্থান বদলাতে বাধ্য হয়েছে তালেবান।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসলামিক আমিরাতের (আফগানিস্তান) জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরামর্শ অনুযায়ী, কেন্দ্র ও প্রদেশের নারী কর্মীদের নিয়মিত কাজে যোগ দিতে বলা হচ্ছে।’
এ ছাড়া জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘ইসলামিক আমিরাত তাঁদের (নারীকর্মী) দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা দেবে না।’
এর আগে তালেবানের অন্যতম মুখপাত্র মোহাম্মদ নাঈম ওয়ারদাক বলেছিলেন, ইসলামি শরিয়া আইন অনুযায়ী তাঁদের সরকার পরিচালিত হবে, এবং সেখানে নারীরা শিক্ষা ও চাকুরি করার সুযোগ পাবে। তবে তিনি এ কথাও বলেছিলেন—শরিয়া আইনে নারীকে যতটুকু স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা ততটুকু স্বাধীনতাই ভোগ করবেন।
তালেবানের পক্ষ থেকে সম্প্রতি আরও জানানো হয়েছিল, নারীদের ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করা পর্যন্ত তাঁরা যেন কর্মস্থলে ফিরে না যান। কিন্তু, স্বাস্থ্যখাতে নারী চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের অনুপস্থিতিতে দৃশ্যত মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে জরুরি ভিত্তিতে এই খাতে কর্মরত নারীদের কাজে যোগ দিতে বলল তালেবান।
তালেবান গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখল করে নেয়। তারা কাবুলের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাওয়ার পর দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নেন। তালেবান প্রায় গোটা আফগানিস্তানের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলেও এখনও তারা কোনো সরকার গঠন করেনি।