বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন অবশ্যই এদেশে হবে। তবে, সেই নির্বাচন হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।
সোমবার (১৯ জুন) বিকেলে বগুড়া শহরের সূত্রাপুর সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলার নেতাকর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ এ প্রধান অতিথির তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তখনই শুধু এই দেশে একটা নির্বাচন হবে, তার আগে কোনো নির্বাচন নয়। বর্তমান সরকার দেশটাকে হীরক রাজার রাজ্যে পরিণত করেছে। ভোটের আগে ১০ টাকা কেজি চাল আর ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল শেখ হাসিনা, যা আজ স্বপ্ন। পাকিস্তানি হানাদারদের মতো আওয়ামী লীগ সরকার বন্দুকের ভয় দেখিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে আছে। যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নষ্ট করেছে, তারা আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার বলে দাবি করে। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফেরানোর আন্দোলনে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। দেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। এতটা কঠিন সময় আর কখনও আসেনি। সরকার জোর করে নতুন ভোটারদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
তিনি বলেন, তিস্তার পানিচুক্তি আজও হয়নি, বন্ধ হয়নি সীমান্ত হত্যাও। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন মানুষ বুঝতেই পারে না, কয়েকটা ফ্লাইওভার আর ব্রিজ নির্মাণ করলেই উন্নয়ন হয় না। উন্নয়ন তখনই হবে যখন এই বাংলার সব মানুষ দুই বেলা ভাত পাবে, পড়নের কাপড় পাবে। বর্তমান সরকার শুধু ঋণ করেছে আর সেই বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশের জনগণের ওপর। মোবাইল ফোনে টাকা তুললেই সেখান থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়, যা চলে যায় আওয়ামী লীগের পকেটে। প্রি-পেইড মিটারে এক হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল দিলে সেখান থেকেও নানা অজুহাতে কেটে নেয় ৩০০ টাকা, যা লুট ছাড়া কিছুই নয়।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এই দেশটা তরুণ প্রজন্মের, এ দেশের ভবিষ্যৎ তরুণদের হাতেই। দেশে চার কোটি বেকার। মেধাবীদের চাকরি দিতে পারে না সরকার। ব্যবসার সুযোগ দিতে পারেনি। তারা চাকরি কোথা থেকে দেবে। তারা তো কী করে লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করবে, বিদেশে বাড়ি বানাবে, সেটা নিয়ে ব্যস্ত। বাংলাদেশের লুট হওয়া গণতন্ত্র আবার প্রতিষ্ঠা হবে এই তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের প্রায় চার কোটি মানুষ ভোট বঞ্চিত হয়েছে, যা মেনে নেওয়া যায় না। তরুণদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতেই চলমান এ আন্দোলন।
জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনুকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার প্রমুখ।