সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক যারা বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়ে পড়েছেন এবং দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন, তাদের দ্রুত দেশে ফেরার সুযোগ দিতে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যূলারবিষয়ক উপমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফকে অনুরোধ জানিয়েছেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যূলারবিষয়ক উপমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফের সঙ্গে বৈঠকে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এ অনুরোধ জানান তিনি।
এসময় রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যেসব বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের নামে কর্মক্ষেত্র থেকে পালানোর মামলা (হুরুব) রয়েছে, যাদের ইকামার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে এবং যারা দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন, তাদের দেশে ফেরার জন্য ছাড়পত্র পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়। এসব অভিবাসীদের বেশিরভাগ কর্মহীন অবস্থায় দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে আর্থিক সংকটে পড়েন, যা বিদেশে তাদের জন্য কষ্টদায়ক হয়ে পড়ে।’
বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশি অনেক কর্মী বিভিন্ন অভিযোগে সৌদি আরবে কারারুদ্ধ রয়েছে। যেহেতু তারা তাদের পরিবারের উপার্জনকারী সদস্য, তাই কারারুদ্ধ অভিবাসীদের পরিবার বাংলাদেশে অনেক কষ্টে রয়েছে।’ যারা গুরুতর অপরাধের জন্য বন্দী নন, এমন বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য সৌদির রাজকীয় ক্ষমা বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন রাষ্ট্রদূত।
‘উদার এবং শ্রমবান্ধব শ্রমিক নীতি হওয়ায় বিদেশি শ্রমিকদের জন্য সৌদি আরব একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এজন্য আমরা সৌদি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সৌদি আরবে কাজ করার একটা প্রবণতা রয়েছে। বর্তমানে অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি,’ যোগ করেন রাষ্ট্রদূত।
অভিবাসী শ্রমিকদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়, যা প্রতি বছরের মতো এবছর আয়োজিত যৌথ কমিশন সভায় উল্লেখ করা হয়েছে।
জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সৌদি আরব দক্ষ জনশক্তিকেই স্বাগত জানাবে। তাই বাংলাদেশে আমরা আমাদের শ্রমিকদের দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি।’
এ সময় সৌদি উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফ বলেন, ‘বাংলাদেশি শ্রমিকরা কঠোর পরিশ্রমী এবং তারা সৌদি অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন।’
বাংলাদেশি শ্রমিকদের সমস্যাগুলো জেনে তা দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেবেন বলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন তিনি।