ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে অবাধে নদী পথে আসছে ভারতীয় গরু। এসব ভারতীয় গরু কুড়িগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যাচ্ছে।
ভারতীয় গরুর চাপে দেশীয় খামারিরা বিপাকে পড়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভারতীয় গরু হাটে বিক্রি বন্ধে কঠোর নজরদারীর দাবি করলেও বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই।
কোরবানী ঈদ উপলক্ষ্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছে গরু পাচারকারী একটি সিন্ডিকেট চক্র। সরেজমিনে দেখা যায় জেলার সবচেয়ে বড় গরুর হাট কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুরে ভারতীয় গরু আর মহিষের ভিড়ে দেশি গরুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া ভার।
জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবেশ মুখ নারায়ণপুর ইউনিয়ন দিয়ে অবাধে আসছে ভারতীয় গরু। এছাড়াও উলিুপরের সাহেবের আলগা দিয়ে নদী পথে শত শত ছোট-বড় গরু ও মহিষ দেশের সীমানায় প্রবেশ করানো হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদ দিয়ে দিনে কিংবা রাতে গরু ও মহিষের পা বেঁধে কলার ভেলার সাথে অমানবিকভাবে বেঁধে নদীতে স্রোতে ভাসিয়ে দিচ্ছে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের পর এসব গরু-মহিষ ডাঙালু বা রাখাল দিয়ে স্থলে তুলে নিয়ে হাটে তোলা হচ্ছে। লাইন ম্যানরা ছোট গরু প্রতি ৫০০ এবং বড় গরু প্রতি এক হাজার টাকা নেয়। আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁটাতার দিয়ে পার করতে ডাঙ্গালুরা গরু প্রতি ২-৩ হাজার টাকা নেয়। আর এসব গরু-মহিষ হাট পর্যন্ত প্রতিটির জন্য ৩’শ টাকা করে নেয় রাখালরা।
হাট ইজারাদারদের গরু-মহিষ প্রতি ৩৫০ টাকা দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে হাটে। অবৈধ এসব গরুর কোন করিডোর কিংবা অনুমোদিত বিট খাটাল না থাকলেও গরু-মহিষ প্রতি ১৫০ টাকা করে বিট আদায় করে লাভবান হচ্ছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। প্রশাসনের নাকের ডগায় হাটে ভারতীয় গরু-মহিষের অবাধে বিক্রি হলেও সরকার হারাচ্ছে কোটি-কোটি টাকা। অসুস্থ রোগাক্রান্ত এসব গরু হাটে অবাধে বিক্রি হলেও গরুর স্বাস্থ্য পরিক্ষায় নেই কোন ব্যবস্থা। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন স্থানীয় দেশি গরু খামারিরা। আর এসব গরু-মহিষ অবাধে ট্রাক যোগে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, দেশীয় খামারি ও গরু ব্যবসায়ীদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সীমান্ত পথে ভারতীয় গরু পাচার রোধে প্রশাসন কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ স্থানীয় প্রশাসনের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া যাতে ভারতীয় গরু যেন বাংলাদেশে না আসে। এই বিষয়ে কোন অনিয়ম হলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।