যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন-এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে দেশটির মুসলিম কমিউনিটি। ২০ জুলাই সোমবার এ কমিউনিটির একদল প্রভাবশালী নেতা তার প্রতি এ সমর্থন ব্যক্ত করেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনপিআর।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, সমর্থন জানানো ব্যক্তিদের তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ইলহান ওমর এবং আন্দ্রে কারসন, মিনেসোটা-র অ্যাটর্নি জেনারেল কেইথ এলিসন-এর নামও রয়েছে।
ইলহান ওমর ইতোপূর্বে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সকে সমর্থন দিয়েছিলেন। তবে সম্প্রতি স্যান্ডার্স দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বাইডেনকে মেনে নিলে ইলহান ওমর-ও তাকে সমর্থন দেন।
বাইডেন-কে সমর্থন জানিয়ে পাঠানো মার্কিন মুসলিম নেতৃবৃন্দের একটি চিঠি হাতে পেয়েছে এপি। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্পকে হটিয়ে দেওয়া এবং এমন কাউকে তার জায়গায় স্থলাভিষিক্ত করা যে আমাদের জাতিকে সুস্থ করে তোলার কাজ শুরু করতে পারবেন। বাইডেন প্রশাসন জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এমগেজ অ্যাকশন নামের মুসলমানদের শক্তিশালী একটি নাগরিক সংগঠন আনুষ্ঠানিকভাবে বাইডেনকে সমর্থন দেওয়ার এ উদ্যোগ নেয়। এ সংগঠনটি দেশটিতে মুসলমানদের রাজনৈতিক জোট হিসেবে পরিচিত।
সোমবার সংগঠনটির ‘মিলিয়ন মুসলিম ভোটস’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সমাবেশেও অংশ নেন জো বাইডেন। সেখানে দেওয়া বক্তব্যে নির্বাচিত হলে ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই ট্রাম্পের কথিত মুসলিম নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় তিনি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কঠোর সমালোচনা করেন।
ভাষণে এবারের নির্বাচনকে আধুনিক আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে আখ্যায়িত করেন বাইডেন। বিজয়ী হলে নিজ প্রশাসনে মুসলিমদের রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বেশিরভাগ প্রেসিডেন্টই টানা দুই মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এবার এখনও পর্যন্ত নির্বাচনি জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন জো বাইডেন। সেক্ষেত্রে আগামী নির্বাচনে তিনি জয়ী হলে সিনিয়র বুশের পর ট্রাম্পই হবেন মাত্র এক মেয়াদ ক্ষমতায় থাকা প্রথম প্রেসিডেন্ট।
এদিকে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল মেনে নেওয়ার আগাম ঘোষণা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ট্রাম্প। ফক্স নিউজকে তিনি বলেছেন, ‘এখনও এ ধরনের গ্যারান্টি দেওয়ার সময় আসেনি।’
সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময়ও একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। ওই নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে আগাম ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। এবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো।
এবার এমন এক সময়ে ট্রাম্প ফল মেনে নেওয়ার আগাম ঘোষণা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, যখন জনমত জরিপগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জো বাইডেনের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাকে দেখতে হবে। আমি হ্যাঁ কিংবা না; কিছুই বলছি না। শেষ সময়ের আগে আমি কিছুই বলবো না।’ তার এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন বলেছেন, ‘আমেরিকার জনগণই এই নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’