করোনা ভাইরাস সমগ্র পৃথিবীতে এক ভয়াবহ মহামারি রূপ নিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশে।বাদ পড়েনি বাংলাদেশও।যেখানে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড বলা হত রেমিটেন্স যোদ্ধাদের, সেখানে করোনার প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্নদেশে কর্মহীন হাজার হাজার শ্রমিক।
অপরদিকে, অনেক শ্রমিকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে, এমনকি মেয়াদ শেষ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেআরো ৮০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক।এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিংএজেন্সির (বায়রা) তথ্যে জানা যায়,করোনা মহামারির শুরুর সময় ইস্যুকৃত ভিসা চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল ৮৫ হাজার ৪০৫টি।এসব ভিসাধারী শ্রমিকের অনেকেই সৌদি আরব, দুবাই, সিঙ্গাপুর, কাতার, কুয়েত সহ মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেযাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন।অপরদিকে তথ্যে আরো জানা যায়, প্রক্রিয়ায় থাকা যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তাদের অনেকেই বিমানের টিকিটওকিনে রেখে ছিলেন, আবার কারো কারো ভিসা হয়েছিল, কিন্তু টিকিট কাটা হয়নি তাদের সকলের বিদেশে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।এমনকি দ্রুত করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে প্রবাসী কর্মহীন শ্রমিকদের বাধ্য হয়ে দেশে চলে আসতেহবে এবং যারা বিদেশে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন তারাও আর যেতে পারবেন না। ফলে চরম এক বিপাকে পড়তেযাচ্ছে বাংলাদেশের শ্রমবাজার।বায়রার তথ্যে জানা যায়, এরই মধ্যে ২ হাজার ১৮৬টি ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে।
আরো ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণেরঝুঁকিতে রয়েছে ৮২ হাজার ৫৮৯ জন শ্রমিক। ভিসা স্ট্যাম্পের জন্য অপেক্ষমাণ ছিলেন ৩০ হাজার ৪২২ জন।এছাড়া, ভিসা স্ট্যাম্পিং সম্পন্ন হয়েছে ১৯ হাজার ১৯৮ জনের, জনশক্তি ছাড়পত্র পেয়েছে ২২ হাজার ৯৮৭টি।ফ্লাইট বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৭৪ ও অন্যান্য প্রক্রিয়ায় আরও বাতিল হয়েছে ৬ হাজার ৯০৪টি।এ বিষয়ে বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এরই মধ্যে প্রায় ৩ হাজারভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে আরো প্রায় ৮২ হাজার। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এসব কর্মীর ভিসা প্রক্রিয়ার যাবতীয় কাজ করতে এজেন্সিগুলোর ১৫ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়ে গেছে।
’ শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান আরও জানান, ‘মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছি। আসন্ন ঈদের পর আবারো কর্মী পাঠানো যায় কিনা, সে চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে টিকে থাকতে হলে দক্ষ শ্রমিক রফতানিতে জোর দিতে হবে আমাদের। কারণ সমগ্র বিশ্বে অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তিতে রূপান্তরিত হবে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত। তাই এই দুইটি খাতে প্রচুর শ্রমিক প্রয়োজন হবে।
তাই আমাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’ নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর কারণে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন অনেক শ্রমিক। কিন্তু মহামারির শুরুর পর থেকেই পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে জনশক্তি রফতানি। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়া সহ মহামারি সৃষ্ট বিভিন্ন কারণে যেসব শ্রমিক বিদেশ যাত্রার প্রক্রিয়ায় ছিলেন, শঙ্কাপূর্ণ অনিশ্চয়তার মেঘ ঘিরে ধরেছে তাদের।
এরই মধ্যে অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। শেষ হওয়ার পথে রয়েছে আরো সাড়ে ৮২ হাজারেরও বেশি শ্রমিকেরভিসার মেয়াদ।
উৎসঃ এভিয়েশন নিউজ