চাঁপাইনবাবগঞ্জের তেলকুপি সীমান্তে এক কৃষককে বাংলাদেশি ভুখণ্ডে বেধড়ক মারধরের পর গুলি করে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
নিহত ব্যক্তি শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের তেলকুপি লম্বাপাড়ার আইনাল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর (৫০)।
ভারতীয় ২৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গোপালনগর ক্যাম্পের সদস্যরা আর্ন্তজাতিক সীমান্ত মেইন পিলার ১৮০ সাব পিলার ৫/৬ এর মধ্যবর্তী স্থানে ভারতীয় অংশে নিয়ে গিয়ে তাকে হত্যা করে। জাগাঙ্গীর নোম্যান্সল্যান্ডের বাংলাদেশী ভুখণ্ডে অবস্থান করলেও বিএসএফ সদস্যরা সেখানে এসে তাকে মারধর করে। পরে ৫০ গজ অভ্যন্তরে নিয়ে গিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে।
নিহতের পরিবার এবং স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সকাল ৯টার দিকে সীমান্তের জমিতে ঘাস কাটছিল জাহাঙ্গীর। ঘাস কাটার পাশাপাশি ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করছিলো সে। এসময় ভারতীয় কাঁটাতারের বাইরে নোম্যান্স ল্যান্ডের বাংলাদেশী ভুখণ্ডে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র গোপলনগর ক্যাম্পের সদস্যরা এসে তাকে প্রথমে বেধড়ক মারধরের পর গুলি করে হত্যা করে। পরে তার লাশ ভারতীয় অংশে ফেলে রেখে চলে যায়।
নিহতের ভাতিজা মাসুদ এবং প্রতিবেশী হারুন জানান, নিহত জাহাঙ্গীরের কোন অপরাধ ছিলো না। ঘাস কাটা অবস্থায় বাংলাদেশের ভেতরে এসে বিএসএফ তাকে মারধরের পর গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
নিহত জাহাঙ্গীরের সন্তান টামাস জানায়, আব্বা বাংলাদেশের মধ্যেই ঘাস কাটছিলো, এসময় বিএসএফ এসে তাকে প্রথমে প্রচুর মারধর করে পরে মাটিতে ফেলে গুলি করে। আমি জানার পরই দৌড়ে যেতে দেখি বিএসএফ চলে গেছে, আর আমার আব্বার লাশ মাটিতে পড়ে আছে।
ইউপি সদস্য মোফাজ্জল হোসেন জাহাঙ্গীরের ঘাষ কাটতে যাওয়ার কথার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বর্ডারের নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায় মারধরের পর জাহাঙ্গীরকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। এখন তার লাশ বাড়িতে আছে। বিজিবি’র সাথে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখানে জাহাঙ্গীরের ব্যবহৃত গামছা এবং ফাঁদ পাতার সরঞ্জাম দেখেছি। সেখানে বিস্তৃর্ণ স্থানে রক্তের চিহ্নও রয়েছে।
এঘটনায় ৫৯ বিজিবি’র রহনপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহমুদুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমরা নিশ্চিত হয়েছি কৃষক জাহাঙ্গীরকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। নোম্যান্সলান্ডের ৫০ গজ ভারতীয় অভ্যন্তরে হত্যাকাণ্ডের আলামত পাওয়া গিয়েছে। এঘটনায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। এছাড়া পতাকা বৈঠকেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। সেখানেও আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাবো।
প্রসঙ্গত শুক্রবার মাতাল অবস্থায় অস্ত্রসহ ভারতীয় ৪৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের আলিপুর ক্যাম্পের সদস্য আসাদ ভোলাহাটের চাঁনশিকারী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। এসময় তাকে উদ্ধার করে বিজিবি’র ক্যাম্পে পৌঁছে দেয় স্থানীয় এলাকাবাসী। পরে সন্ধ্যায় ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের পর আসাদকে বিএসএফ’র নিকট হস্তান্তর করে বাংলাদেশী সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি।
উৎসঃ যমুনা টেলিভিশন