
সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন ‘প্রবাসী সনাতনী ঐক্য পরিষদ’-এর উদ্যোগে মহালয়া উদযাপনের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) আজমান প্রদেশে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মহালয়া হলো আবেগঘন ও আধ্যাত্মিক সংযোগের মুহূর্ত, ঐতিহ্যের এক মহোৎসব এবং মন্দের ওপর ভালোর জয়ের প্রতীক।
শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার মর্ত্যে আগমনই ‘মহালয়া’ নামে পরিচিত। এই দিনটিকে পিতৃপক্ষ ও দেবীপক্ষের সংযোগকাল বলা হয় এবং এটি বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনেই দেবী দুর্গা পৃথিবীতে আবির্ভূত হন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অজিত কুমার রায় এবং সঞ্চালনা করেন উত্তম কুমার সরকার। দুই পর্বে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে সংগঠনের লোগো উন্মোচন, ম্যাগাজিন প্রকাশ এবং নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা রঞ্জন মজুমদার, বিশ্বনাথ দে, অসীম কুমার ভট্টাচার্য, প্রদীপ কুমার রায় চৌধুরী, দিনোবন্ধু তালুকদার, ও রাজু চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাবু অদুল কান্তি চৌধুরী, অনিতা চৌধুরী এবং বাবু মৃণাল কান্তি চৌধুরী।
সাংস্কৃতিক পর্বের সঞ্চালনায় ছিলেন স্বর্ণালী ঘোষ। নৃত্য পরিবেশন করেন মিতা হায়িত ও সঞ্চিতা রায়। সংগীত পরিচালনা করেন শিমুল দেবনাথ এবং চণ্ডীপাঠে অংশ নেন শুভ ব্যানার্জি।
সংগীত পরিবেশন করেন সুমনা দাশ, স্নিগ্ধা সরকার তিথি, মিতা সাহা, পাপড়ি মল্লিক, রুমকি সরকার, অনামিকা সাহা, কলি মজুমদার, বীথি সেন, প্রমীলা সেন, পূজা এইচ, দ্বীপ দেবনাথ, শিপন কর্মকার, সঞ্জয় সরকার, রিংকু সরকার, ও শিবলু দাশ। যন্ত্রসংগীতে ছিলেন বাবু অজিত রায়, শিমুল দেবনাথ, বাপ্পারাজ নাথ, ও ওম সরকার।
বক্তারা বলেন, মহালয়া দুর্গোৎসবের অন্যতম প্রধান পর্ব। পুরাণ মতে, দুর্গোৎসবের তিনটি ধাপ হলো— ‘মহালয়া’, ‘বোধন’ ও ‘সন্ধিপূজা’। মহালয়ার দিনেই দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করার দায়িত্ব লাভ করেন। কারণ শিবের বর অনুসারে কোনো দেবতা বা মানুষ মহিষাসুরকে বধ করতে পারতেন না। যখন অসীম ক্ষমতাসম্পন্ন মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গচ্যুত করে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইলে, ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব একত্রিত হয়ে মহাশক্তি ‘মহামায়া’ সৃষ্টি করেন। দেবতাদের দেওয়া দশটি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা নয় দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত করে তাকে বধ করেন।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে মূল দুর্গোৎসব শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, মহালয়া থেকেই দুর্গাপূজার আগমনধ্বনি বেজে ওঠে। এই দিনটিকে ঘিরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন মন্দির ও পূজা কমিটি বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
প্রবাসী সনাতনী ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আজমান প্রদেশে চণ্ডীপাঠ, চণ্ডীপূজা ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে মহালয়ার ঘট স্থাপন করা হয়।