মোঃ রাসেল ইসলাম, যশোর জেলা প্রতিনিধি: যশোরের বেনাপোল পৌরসভায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় পৌরসভার ২টি ওয়ার্ড দুর্গাপুর ও বেনাপোল বাহাদুরপুর রোডকে রেডজোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এতে এসব পৌর এলাকার কয়েকটি মহল্লাকে লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ তা মানছে না, চলাফেরা স্বাভাবিক রয়েছে। সামাজিক দূরত্ব কেউ মেনে চলছেনা৷ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছে না৷
এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক সচেতনতামূলক মাইকিং করার কথা থাকলে সেটি যথেষ্ট পরিমান করা হয়নি বলে দাবি করেছেন ঐ দুইটি ওয়ার্ডের সাধারন মানুষ।
এ সকল এলাকায় গেলে দেখা যায় বিনাকারণে বাসা বাড়ি থেকে বের হচ্ছে মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ একাধিক মোবাইল টিম কাজ করছে। লকডাউনের কারণে এসব এলাকায় জরুরি সেবা ছাড়া প্রবেশ ও বের হওয়াসহ যান চলাচলের পথ বন্ধ ঘোষণা করা হলেও তা বাস্তবে কোনা কাজে আসছে না।
গত ১৬ই জুন থেকে বেনাপোল পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ড দুর্গাপুর ও ২১শে জুন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড বাহাদুরপুর রোড পৌর এলাকাকে রেড জোন চিহ্নিত করে লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন।
বেনাপোলে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এনামুল হক মুকুল বলেন দু-তিনজন করোনা রোগীর জন্য পুরো ওয়ার্ডটিকে লকডাউন করা ঠিক হয়নি। শুধুমাত্র যারা পজেটিভ হয়েছে তাদের বাড়ী যে লকডাউন করেছে সেটাই ঠিক ছিল ৷
তাছাড়া ২নং ওয়ার্ড দুর্গাপুরে যেভাবে বাঁশ দিয়ে লকডাউন সৃষ্টি করা হয়েছে তাতে দুর্গাপুর গ্রামের পার্শ্ববর্তী নামাজ গ্রাম গাজীপুর হওয়াই এ দুটি ওয়ার্ডের জনসাধারণের চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে৷
বেনাপোল নারায়ণপুর গ্রামের সংবাদকর্মী এ জামান রিপন বলেন,আমি নারায়ণপুর থেকে বেনাপোল এ আসা-যাওয়ার জন্য বেনাপোল-বাহাদুরপুর সড়কটি ব্যবহার করি। কিন্তু আমার গ্রামতো লকডাউন বা রেডজোন ঘোষনা করা করা হয়নি৷ বেনাপোল-বাহাদুরপুর রোড লকডাউন ও রেডজোন ঘোসনা থাকায় বিকল্প আর কোন পথ না থাকার কারণে আমার গ্রামের অধিকাংশ মানুষকে বাহাদুরপুর- রঘুনাথপুর রোড হয়ে অথবা নারায়ণপুর -কাগজপুকুর সড়ক হয়ে বেনাপোলে যাতায়াত করতে হচ্ছে ৷ এতে যেমন সময়ক্ষেপন হচ্ছে তেমনি,জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে৷ তাছাড়া তিনি আরো জানান, লকডাউন ও রেডজোন ঘোষিত দুটি এলাকায় এলাকায় কেউ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না৷ তবে কেন বা কাদের জন্য এই লকডাউন তিনি প্রশ্ন রাখেন সাংবাদিকদের কাছে ৷
তিনি আরও দাবি করেন যে পরিবারগুলো করোনা পজিটিভ হয়েছে শুধুমাত্র তাদের বাড়ি লকডাউন করে দিলে ভালো হতো৷ ৪-৫ টি পরিবারের জন্য হাজার হাজার পরিবারের কষ্ট দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে৷
দৈনন্দিন জীবনে খেটে খাওয়া মানুষগুলোর জীবনযাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বেনাপোল পৌরসভা ও সরকারী পর্যায়ে কোন ত্রাণ সামগ্রী তারা পাচ্ছে না, আবার পরিবারের পরিবারের জন্য দুবেলা-দুমুঠো খাবারের জন্য বাইরে যেতে পারছে না । দৈনন্দিন খেঁটে খাওয়া মানুষের দাবি তাদের জন্য সরকারি অনুদান অথবা ত্রাণ সামগ্রী ব্যবস্থা করা হোক৷
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা ভূমি কমিশনার খোরশেদ আলম চৌধুরী জানান স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার কারণে আমরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে জরিমানা আদায় করেছি, তারপরও জনসাধারণ কে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আওতায় আনতে পারছি না ৷ অভিযান চলাকালে সবাই সতর্ক থাকলেও অভিযান শেষে তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে না৷ যার কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এই উপজেলায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে৷ তিনি আরো বলেন, শার্শা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শার্শা ইউনিয়নের নাভারন বাজার ও বেনাপোল পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডকে লকডাউন ও রেডজোন ঘোষণা করা হয়েছে৷ আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে৷