হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে (এইচএমপিভি) সাধারণত মৃত্যু হয় না, কিন্তু ক্রমাগত রূপান্তর ঘটে এটি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. সায়েদুর রহমান এ কথা জানান। এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হয়ে সানজিদা আক্তার নামের এক নারীর মৃত্যুর পর এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
ডা. সায়েদুর রহমান জানান, এক মাসের বেশি সময় ধরে অসুস্থ ছিলেন সানজিদা। প্রথমে নিজ বাসার আশেপাশেই চিকিৎসা নেন তিনি। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি হন। বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুসারে বলা যায়, এইচএমপিভির কারণে মৃত্যুর ঘটনা খুবই বিরল। তিনি ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন এবং পরবর্তীতে তার মাল্টিঅর্গান ফেইলার হয়। এছাড়া তার স্থূলতা ছিল, থাইরয়েড ডিসফাংশনও ছিল। নিউমোনিয়া ও মাল্টিঅর্গান ফেইলারের কারণেই সানজিদার মৃত্যু হয়েছে। এসবের সঙ্গে রোগী দুর্ভাগ্যজনকভাবে এইচএমপি ভাইরাসেও আক্রান্ত ছিলেন।’
ডা. সায়েদুর রহমান আর বলেন,‘এই ভাইরাসে সাধারণত মৃত্যু হয় না। মৃত্যু হচ্ছেও না। আশপাশের দেশে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক এজেন্সিগুলোর স্বাস্থ্যবিষয়ক কিছু গাইডলাইন আছে। এ সময়ে যদি কেউ ফ্লুতে আক্রান্ত হন, তিনি যেন জনসম্মুখে না আসেন। এলেও মাস্ক পরতে হবে। আবার কেউ অসুস্থবোধ করলে তিনি যেন ঘরে থাকেন। তবে অসুস্থ হলে হাত ধোয়া ও জনসম্মুখে মাস্ক পরলে এইচএমপি ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. সায়েদুর রহমান আরও বলেন, ‘ভাইরাসের যখন বিস্তার হতে থাকে, তখন সেটার প্রতিনিয়ত মিউটেশন বা রূপান্তর হতে থাকে। কোভিড-১৯ ভাইরাসও অনেক পুরোনো ভাইরাস ছিল। মিউটেশনের কারণে এটাও (এইচএমপিভি) ক্ষতিকর বা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। এ কারণেই এই ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা দরকার।’
এখনও দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে না জানিয়ে ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘তবে কেউ যদি ফ্লুতে আক্রান্ত হন, তিনি যেন সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে কম আসেন। অসুস্থ হলে তিনি যেন ঘরে থাকেন।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, আইসিডিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।