রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রাম জেলার সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বন্ধের দাবিতে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ পদযাত্রা শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কুড়িগ্রামের কলেজ মোড় বিজয়স্তম্ভ থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যৌথভাবে এ পদযাত্রার আয়োজন করে। সীমান্তে হত্যাকাণ্ডে সব শহীদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করে পদযাত্রা শুরু হয়।
আয়োজক সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, এ পদযাত্রার মাধ্যমে বিএসএফের বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যা বন্ধ এবং ফেলানী হত্যার বিচারসহ পাঁচ দফা দাবিতে লিফলেট বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া পথিমধ্যে কয়েকটি জায়গায় পথসভা ও লিফলেট বিতরণ করে ফেলানীর বাড়িতে গিয়ে কবর জিয়ারত করা হবে। পরে নাগেশ্বরীর রামখানায় পথসভা করে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ পদযাত্রা শেষ হবে।
পদযাত্রায় জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদ, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম প্রমুখ অংশ নেন। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, নির্বাহী সদস্য রিফাত রশিদ, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদের উপস্থিত ছিলেন।
নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলনিটারী গ্রামের নুর ইসলাম ও জাহানারা দম্পতির বড় সন্তান ফেলানী। কাজের সন্ধানে ভারতে গিয়েছিল ফেলানী। ভারতের দালালদের সহায়তায় সে ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাড়িতে ফিরছিল। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি মই দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের সদস্যদের গুলিতে ফেলানী মারা যায়। অন্তত পাঁচ ঘণ্টা তার দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে ছিল। সেই ছবি দেশি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং মানবাধিকারকর্মীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় তোলে। ওই হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর হলেও বিচার শেষ হয়নি।
‘মার্চ ফর ফেলানী’ পদযাত্রায় পাঁচ দফা দাবির মধ্যে আছে—সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ ফেলানীসহ সীমান্তের সব হত্যাকাণ্ডের বিচার আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে সম্পন্ন করা, সীমান্তে সব ধরনের মরণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধে চীনের মতো চুক্তি, শহীদ ফেলানীর নামে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনের নামকরণ, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বাতিল করে সাম্য, ন্যায্যতা ও পারস্পরিক মর্যাদার ভিত্তিতে নতুন পররাষ্ট্রনীতি গঠন, প্রান্তিক জেলা কুড়িগ্রামের দরিদ্রতা নিরসনে নদী সংস্কার ও চরের জীবন–জীবিকা উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।