যুক্তরাষ্ট্রের নববির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ভারতীয় পণ্যে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মার্কিন পণ্যে ভারতের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে কয়েক মাস আগে তিনি দেশটিকে ‘শুল্ক আরোপের বড় অপব্যবহারকারী’ হিসেবে উল্লেখ করার পর সম্প্রতি এই হুঁশিয়ারি দেন। তার এই হুঁশিয়ারির কারণে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য সম্পর্কে চলতে থাকা রেষারেষির প্রতিচ্ছবিই যেন ফুটে ওঠেছে। খবর ইকোনোমিক টাইমসের।
ভারতীয় পণ্যে ‘বিপরীত শুল্ক’ আরোপের ইচ্ছা প্রকাশ করে গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ফ্লোরিডায় তার বাসভবন মারে লাগোতে এক সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘তারা যদি শুল্ক আরোপ করে আমরাও এর বিপরীতে একই পরিমাণ শুল্ক আরোপ করব। তারা শুল্ক আরোপ করলে আমরাও শুল্ক আরোপ করব। প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই তারা শুল্ক আরোপ করছে, কিন্তু আমরা এখনও শুল্ক আরোপ করিনি।’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই অবস্থান ২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় বাণিজ্য নিয়ে তার নীতি ও কথাবার্তার সঙ্গে বেশ মিল পাওয়া যায়।
রক্ষণশীল ব্যবস্থা আরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের জন্য ভারত আগে থেকেই সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে মার্কিন পণ্যে ভারত ও ব্রাজিলের অত্যধিক শুল্কারোপের বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়েছে। এ সময় ট্রাম্প বলেন, ‘বিপরীত শব্দটি এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কেউ যদি আমাদের ওপর শুল্কারোপ করে, যেমন ভারত যদি তা করে, সেক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন নেই, যদি ভারত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, তবে আমরা কেন একই পরিমাণ শুল্ক আরোপ করবো না?’ তিনি অভিযোগ করেন, ভারত ও ব্রাজিল কোনো কোনো ক্ষেত্রে যেমন বাইসাইকেলের ওপর ১০০ থেকে ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।
তবে এই প্রথম ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিলেন, তা নয়। এর আগেও তিনি ভারতকে ‘শুল্ক রাজা’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি হার্লি-ডেভিডসন মোটরসাইকেলের ওপর ভারতের অত্যধিক শুল্ক আরোপের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কৌশলগত সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ে বেশ এগিয়ে গেলেও বাণিজ্যিক অংশীদারত্ব বেশ কিছু বাধার মুখে পড়ে। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে শুল্ক বাড়ালে এর বিপরীতে ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশ কিছু পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপ করে। এর জবাবে সে সময় ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস (জিএসপি) সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়। ২০২৩-২৪ সালে ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৪২.২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। এ সময়ে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে ৭৭.৫২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।