সোলায়মান হাসান, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সালিশ চলাকালে মফিজুর রহমান রতন (৩৩) নামে এক দলিল লেখককে গুলি করে ও কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ কর্মীদের ওপর।
শনিবার (২৯ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মুন্দিরপুর গ্রামে এ হামলা হয়।
আহত রতন মহজমপুর উত্তর কাজীপাড়া গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে।
মহজমপুর গ্রামের কাজী আনোয়ার জানান, দলিল লেখক রতনের মায়ের নানি বাড়ির জমি নিয়ে মাঝেরচর জগন্নাদী এলাকার রাসেল আহম্মেদ খোকনদের সঙ্গে বিরোধ চলছে। শনিবার বিকেলে ওই জমি নিয়ে গ্রাম্য সালিশ বসে। সেখানে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রাসেল আহম্মেদ খোকনের নেতৃত্বে রতনের ওপর হামলা হয়। এ সময় খোকনের সহযোগী শাকিব রতনকে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। পরে অপর সহযোগী শাহিন রতনকে পিস্তল দিয়ে গুলি করেন। এসময় রতনের ডান হাত গুলিবিদ্ধ হয়। পরে সালিশে উপস্থিত অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা তাইজুদ্দীন তাজু, কাজী আনোয়ার ও মো. ফারুকসহ অন্যরা রতনকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে স্থানীয়রা জানায়, জমির সালিশ শেষে রতন বাসায় ফেরার পথে নোয়াদ্দা এলাকায় পৌঁছালে মাঝেরচরের আওয়ামী লীগ কর্মী নূর হাসান, রাব্বি, তামিম ও রায়োদগাঁও এলাকার তামিম এলোপাতাড়িভাবে ছুুরিকাঘাত ও পিটাতে থাকে। পরে তিনি আত্মরক্ষার্থে পার্শ্ববর্তী ওমর ফারুকের বাসায় আশ্রয় নেয়। সেখানেও তারা গিয়ে রতনকে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। এসময় ওমর ফারুকের স্ত্রী ও মেয়ে খাদিজা আক্তার তুলি তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। পরে হামলাকারীরা তাদের পিস্তল দেখালে তারা সামনে আসেনি। এরপর রতনকে গুরুতর আহত করে তারা চলে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে তাকে সোনারগাঁ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হামলাকারী সবাই আওয়ামী লীগ নেতা রাসেল আহমেদ খোকনের সমর্থক ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে স্থানীয়রা জানায়। এছাড়া রাসেলের নির্দেশেই এ হামলা হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত রাসেল আহম্মেদ খোকনকে ফোন করা হলে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
রাসেল আহাম্মদ বলেন,
আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, আমি ঢাকায় অবস্থান করছিলাম। এই বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
আহত রতনের ভাই মো. মহাসিন ভূঁইয়া জানান, তারা থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, মারামারি হয়েছে বলে শুনেছি। কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এমন কোনো তথ্য আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।