আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা: সাতক্ষীরা তালা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অনলাইন জুয়ার ফলে তরুণ প্রজন্ম দিন দিন ছোট বড় সংঘবদ্ধ অপরাধের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অনলাইন জুয়ায় আসক্ত তরুণরা নিজেদের সংঘবদ্ধ রাখতে এলাকায় গড়ে তুলেছে কিশোর গ্যাং।
ইতিমধ্যে কয়েকটি গ্রামের বাসা বাড়িতে ছোটখাটো চুরির ঘটনা ঘটেছে, খলিল নগর ইউনিয়নের হাজরাকাটি গ্রামে সাংবাদিক জহর হাসান সাগরের বাড়িতে চুরি হয়েছে সেচ মোটর। তালা সদর ইউনিয়নের জেয়ালা নলতা গ্রামের পুকুর থেকে চুরি হয়েছে লিটন শেখের সেচ মটর, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন বাসা বাড়ি থেকে বাইসাইকেল, ঘরের আসবাবপত্র সহ একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। যার সঙ্গে জড়িত এই অনলাইন জুয়ার পোলাপান। এভাবেই প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসা বাড়িতে যা নিয়ে এলাকাবাসী চরম হতাশ হয়ে পড়েছে।ইন্টারনেট জগতে অনলাইন জুয়ার অ্যাপস সহজলভ্য হয়েছে। এখন যে কেউ চাইলেই অনলাইনে জুয়া খেলতে পারে।
আবার এসব অনলাইন জুয়ায় সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য জুয়ার সাইটগুলো কমিশনের ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে। পাশাপাশি লোভের ফাঁদে ফেলার জন্য বিভিন্ন ধরনের ডেমো অ্যাকাউন্টে অধিক লাভ দেখিয়ে ভিডিও তৈরি করা হয়, যা অনেক মানুষকে আকৃষ্ট করে। যেকোনো ব্যক্তি চাইলে খুব সহজেই এজেন্ট কিংবা যেকোনো আর্থিক মাধ্যমের দ্বারা নিজের অ্যাকাউন্টে টাকা রিচার্জ করতে পারেন। অ্যাপগুলো এমনভাবে সাজানো থাকে, যার ফলে শুরুতে লাভ পাওয়া যায়।
পরবর্তী সময়ে অধিক লাভের আশায় মানুষ আরো টাকা বিনিয়োগ করে। কিন্তু সব হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার সংখ্যাটাই বেশি। অনেক ব্যক্তি ও পরিবার আজ নিঃস্ব কিংবা ধ্বংসের পথে এই অনলাইন জুয়ার কারণে। গ্রাম এলাকায় শ্রমজীবী মানুষ দিনের মজুরির টাকা এই পথে নষ্ট করছে এবং সর্বস্বান্ত হচ্ছে। সন্ধ্যার পর বিনোদনের মাধ্যম হচ্ছে এই সর্বস্বান্ত করার জুয়া। মুনাফার আশায় অনেকে নিজের শেষ সম্বল জমিটুকুও বিক্রি করে থাকে। অনলাইন জুয়ার আসক্তি মাদকের আসক্তির চেয়েও ক্ষতিকর।
সাতক্ষীরা তালা থানায় অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো: মমিনুল ইসলাম পিপিএম জানান, এরকম কোন ঘটনার অভিযোগ আমাদের কাছে আসি নাই তবে আমাদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ পুলিশের যে টিম রয়েছে তারা প্রতিদিন রাতে মনিটরিং করছে ইতিমধ্যে কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরায় দিন দিন এই কিশোর গ্যাংরা খুবই বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এদের বিষয়ে এলাকার অভিভাবক ও সুশীল সমাজ খুবই উদ্বিগ্ন। অনলাইন জুয়া বন্ধ করার জন্য এবং বিপথগামী তরুণদের সঠিক পথে ফিরে আনতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে সচেতন মহল।