রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের উলিপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম উন্নয়ন মেলার নামে মাঠ দখলের অভিযোগ উঠেছে। মাঠটি দীর্ঘ ৫ মাস ধরে উন্নয়ন মেলার প্রস্তুতির নামে ভিতরে সার্কাস প্যান্ডেল ইট লোহা ও কাঠ দিয়ে প্রবেশদ্বারের নতুন কাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। এদিকে মেলা কমিটি বলতে পারছেনা আরো কতদিন পর শুরু হবে এর কার্যক্রম।
এ অবস্হায় স্হানীয় ক্রীড়ামোদী শিশু-কিশোররা শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে খেলাধুলা করা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। উন্নয়ন মেলার আদলে মাঠ দখলের ঘটনায় এলাকার সর্ব স্হরে দারুন ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানাযায়, আয়োজক কমিটি গত ৫ মাস আগে জেলার উলিপুর উপজেলা শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে উন্নয়ন মেলা-২৩ এর প্রস্তুতি নেয়। উপজেলা পরিষদ ও জে.বি. ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় মেলার আয়োজন করা হলেও কমিটির দুটি গ্রুপের মধ্যে সমঝোতার অভাবে মেলা বন্ধ অবস্হায় রয়ে যায়।
একাধিক সূত্র জানায়, উন্নয়ন মেলার নামে সার্কাস,অশ্লীল নিত্যানুষ্ঠান, এবং জুয়া চালানোর সংবাদ পেয়ে অপর গ্রুপ মেলায় অসম্মতি জ্ঞাপন করে। এ অবস্হায় মেলা শুরু করা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর সূত্র জানায়, মাঠটি মেলার দখলে থাকায় চলতি বছর মাধ্যমিক স্কুল ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টগুলো দায়সাড়াভাবে অন্য মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রসাশনের উদ্যোগে কুচকাওয়াজ, শরীরচর্চা ও ডিসপ্লে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের পরিবর্তে উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উলিপুর উন্নয়ন মেলার জন্য আয়োজক কমিটি মাঠটি দারুন সাজসজ্জা করেছেন। মাঠের অবকাঠামোর ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন। ইটের দেওয়াল, লোহা ও কাঠ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে মেলার প্রবেশ ও নির্গমণ দ্বার।
মাঠের মাটি কেঁটে নির্মাণ করা হয়েছে পানির ফোয়ারা ও সার্কাসের মঞ্চ। এর চারপাশের অধিকাংশ স্থানে বিছানো হয়েছে ইট।
বাংলাদেশ জাতীয় কাবাডি দলের সদস্য জিয়াউর রহমান জানান, মাঠে মেলা আয়োজনের প্রস্তুতির নামে দীর্ঘদিন মাঠ বন্ধ থাকায় যুব ছেলেরা খেলাধুলায় মনোনিবেশ না করে মোবাইল গেমিং ও মাদকের প্রতি আসক্ত হচ্ছে।
পৌর মেয়র মামুন সরকার মিঠু বলেন, এই মেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে অনুমতি পায়নি। মেলা আয়োজক কর্তৃপক্ষকে শুরু থেকেই মেলা না চালানোর জন্য বলা হয়েছে।’
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউর রহমান জানান, ‘আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি। এর আগে থেকে মাঠে উন্নয়ন মেলার প্রস্তুতি চলছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ততার কারনে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ মাঠটিতে পুনরায় খেলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।