দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহল থেকে ‘অযাচিত, অযৌক্তিক ও আরোপিত রাজনৈতিক চাপ’ এর মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় দেশের রাজনৈতিক উন্নয়নে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।
জাতিসংঘের মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট আর্ল কোর্টনে র্যাট্রের কাছে গত নভেম্বরে পাঠানো এক চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এই আহ্বান জানান। তবে, চিঠির বিষয়টি সামনে এলো এখন। যখন কি না ভোটের দিনক্ষণের বাকি আর এক মাসও নেই। সেই সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক ও ব্যাবসায়িক মহলে ‘নিষেধাজ্ঞা’ নামক শব্দটি বেশ উচ্চারিত হচ্ছে। চিঠি পাঠানোর বিষয়টি গণমাধ্যমকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন।
চিঠিতে বলা হয়, শেখ হাসিনা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু বিক্ষোভের নামে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি পোড়ানো এবং মানুষকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা তিনি সহ্য করবেন না, যা বিরোধী দল নিয়মিত করে আসছে।
গত ১৫ বছরে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচনের কথাও উল্লেখ করা হয় তাতে। জানানো হয়, শেখ হাসিনা সরকার গত ১৫ বছরে হাজারও নির্বাচন, উপনির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন, আঞ্চলিক নির্বাচন ও মেয়র নির্বাচনের আয়োজন করেছে। খুবই ছোটখাটো কিছু ঘটনা ছাড়া সবগুলো নির্বাচনই ছিল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ।
গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রসঙ্গে চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানুষের সম্মান রক্ষায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে এসব মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে ৩০ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তা স্বত্বেও জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে ‘অযাচিত, অযৌক্তিক ও আরোপিত রাজনৈতিক চাপের’ মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। আমরা আশা করছি, উন্নয়নের পথে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ায় গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করবে বাংলাদেশ।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে জাতিসংঘ বিবৃতি দেয়ায় সরকারের অসন্তুষ্ঠির মনোভাবের কথাও চিঠিতে জানানো হয়। গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো চিঠিতে খালেদা জিয়াকে বিদেশে জরুরি চিকিৎসার জন্য মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক।
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ-ও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের একজন ক্রুসেডার এবং তিনি দেশের মানুষের ভোট, খাদ্য ও সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক কষ্ট করেছেন।