আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
আজ বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এই তফসিল ঘোষণা করেন।
তফসিল ঘোষণায় সিইসি বলেন, আগামী ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমার দেওয়ার শেষ তারিখ। আগামী ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে মননোয়নপত্র যাচাই-বাছাই। এছাড়া, রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রার্থীদের আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর। আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে প্রচার-প্রচারণা।
সিইসি ভাষণে বলেন, আপনারা অবগত আছেন নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। নির্বাচন এলাকার সীমানার পুনঃনির্ধারণের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। নতুন রাজনৈতিক দল ও আগ্রহী দেশি এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধন প্রক্রিয়াও সমাপ্ত প্রায়। দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৭ লাখ। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় ৪২ হাজার। মোট ২ লাখ ৬২ বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে। কমিশন আজ সভা করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তফসিল নির্ধারণ করেছে। কমিশন আজ সভা করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল নির্ধারণ করেছে। আমি এখন সেই তফসিলের কতিপয় মূল বিষয় আপনাদের জ্ঞাতার্থে ঘোষণা করছি।
আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখ (রোববার) ৩০০ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার এবং ৫৯২ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
তফসিল ঘোষণার ভাষণে সিইসি সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। এ সময় তিনি সংবিধান ও আইনের আলোকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন প্রয়োজন হবে। কেউ স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করতে চাইলে নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটারের এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত প্রত্যয়নপত্র লাগবে। অবশ্য কেউ অতীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করে থাকলে এই বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী— গত ১ নভেম্বর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। চলতি একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৯ জানুয়ারি। যার ফলে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এর আগে বিকেল ৫টায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল বিষয়ে বৈঠকে বসে সিইসির নেতৃত্বাধীন কমিশন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শেষ হয় বৈঠক। এরপর জাতির উদ্দেশে ভাষণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি।
কমিশন বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, মো. আনিছুর রহমান এবং ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম উপস্থিত ছিলেন।