তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় মৃত ব্যক্তি ও প্রবাসীদের আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলাজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) জুড়ীতে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে মিছিল করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলগুলো। মিছিলের পর পুলিশ ২৮ জনের নামোল্লেখসহ আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করে।
মামলার লিখিত অভিযোগ সূত্রের বরাত দিয়ে জানা যায়, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি কর্মীরা জনসাধারণের যান চলাচল বন্ধ ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার জন্য উত্তেজিত হয়ে রাস্তায় মিছিল বের করলে পুলিশ তাতে বাঁধা দেয়। পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে তারা মিছিল শুরু করে। পরে নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে সরকারি কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে।
এ ঘটনায় শুক্রবার (৬ অক্টোবর) পুলিশ বাদী হয়ে জুড়ী থানায় একটি মামলা (মামলা নং-০৬) করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামলার এজাহারের ১১নং আসামি লোকমান হোসেন মারা যান ২০১৭ সালের ৪ঠা আগস্ট। তিনি উপজেলার হাসনাবাদ গ্রামের হাজী রুমুজ আলীর ছেলে। আর মামলায় ৬নং আসামি করা হয় জায়েদ আহমদকে। তিনি বিগত ৫ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। জায়েদ আহমদ উপজেলার হামিদপুর গ্রামের মৃত ফয়জুল্লাহর ছেলে।
এদিকে, ফুলতলা ইউনিয়নের রজব উদ্দীনের ছেলে বুরহান উদ্দীন দুই বছর থেকে আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন। মামলায় বুরহানকে ২৩নং আসামি করা হয়েছে। এছাড়া, ফুলতলা বাজারের ইব্রাহিম আলীর ছেলে নাঈম উদ্দীন ২ বছর আগে ফ্রান্সে পাড়ি জমান। তাকেও পুলিশের করা এই মামলায় ২৪নং আসামি করা হয়েছে।
প্রবাসী জায়েদ আহমদের বড় ভাই মো. ফয়ছল আহমদ বলেন, আমার ভাই ২০১৮ সাল থেকে প্রবাসে আছে। সে প্রবাসে থেকেও পুলিশি মামলার আসামি। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এই মামলা দেওয়া হয়েছে। যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয় তাদেরও আসামি করা হয়েছে।
মামলার ১১নং আসামি মৃত লোকমান হোসেনের ভাতিজা ঢাকা জজ কোর্টের শিক্ষানবীস আইনজীবী কামরুজ্জামান বলেন, আমার চাচা মারা গেছেন ৬ বছর আগে। তিনি কীভাবে বৃহস্পতিবার জুড়ীর মিছিলে এসে দেখা না করে চলে গেলেন? একজন মৃত ব্যক্তিকে পুলিশের করা মামলায় আসামি করা হলো! এই বিষয়টি অত্যন্ত হতাশাজনক এবং আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন পাশাপাশি আইনের প্রতিষ্ঠা কতটুকু বৃদ্ধমান তা আবারও বুঝিয়ে দিলো।
জুড়ী থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, বাদীর এজাহারের আলোকে আমরা মামলা নিয়েছি। তদন্ত করে সংশোধন করা হবে।