আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়া সীমান্তে বিশেষ কায়দায় তৈরি ‘দড়িকল’ এর সাহায্যে নদী পথে ভারতীয় ফেন্সিডিলসহ মাদক দ্রব্য পাচার করে আনা হচ্ছে বলে খবর পাওযা গেছে।
ফলে সীমান্তবর্তী এলাকায় যত্রতত্র ফেন্সিডিলের ছড়াছড়ি। প্রতক্ষ্যদর্শীর উদ্ধৃতি দিয়ে একাধিক সীমান্ত সূত্র জানায়, বর্ষাকলে সীমান্তে সোনাই ও ইছামতী নদী পানিতে ভরপুর। নাব্যতা না থাকায় উত্তর বড়ালী থেকে কেঁড়াগাছি পর্যন্ত সোনাই নদী কচুরিপানায় ভরা। কচুরিপানার নিচে দিয়ে এপার ওপার দড়ি বাঁধা আছে। টানা দেওয়া দড়িতে সময় সুযোগ মত মোবাইলে সংকেত দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় পলিপ্যাক মোড়ক করা ফেন্সিডিলের পোটলা বা কার্টুন। অপর একটা দড়ি টেনে ফেন্সিডিল বা মাদকের পোটলা বা কার্টুন ভারত থেকে বাংলাদেশ কিনারে আনা হচ্ছে। এরপর নদী থেকে ফেন্সিডিল তুলে এনে দেশের অভ্যন্তরে পাঠানো হচ্ছে এবং এলাকায় বিপনন হচ্ছে। ভাদিয়ালী থেকে কেঁড়াগাছি পর্যন্ত সোনাই নদীতে কয়েকটি পয়েণ্টে দড়িকল দিয়ে ফেন্সিডিলসহ মাদক পাচারের কাজ চলছে।
এছাড়া উপজেলার চান্দুড়িয়া (গাড়ালবাড়ি) ইছামতী নদী পথে আসছে ফেন্সিডিল। বিজিবি টহল বদলের সময় এবং বিজিবিকে ভুল ইনফরমেশনে ব্যস্ত রেখে বা কিছু খাওয়ায় ব্যস্ত রেখে নদী থেকে ফেন্সিডিল তুলে আনা হয়। সীমান্তে ফেন্সিডিল পাচারের নেতৃত্বে রয়েছে জনৈক ইয়ারালী, জনৈক আশরাফুল, জনৈক নাসির ও ইশারুল। এরা সীমান্তে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত। এই প্রভাবশালী নেতাদের আয়ের উৎসের সংগে অতীত ও বর্তমান সম্পদের পরিমাণ দেখলে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে আসবে বলে সূত্র জানায়। এদিকে উত্তর ভাদিয়ালী ফুলতলা থেকে কালিবাড়ি পর্যন্ত জনৈক শাহিনের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক যুবক বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেন্সিডিলসহ মাদক বেচাকেনায় নিয়োজিত থাকে। বিকাল হলে মোটরসাইকেলে এবং মাঝে মাঝে প্রাইভেট, মাইক্রোয় ভদ্রবেশী মাদক সেবীদের আগমণ ঘটে এই মাদক হাটে। ক্রেতাদের একটি নির্ধারিত স্থানে যেতে বলা হয়। আর পতিমধ্যে ক্রেতার হাতে ফেন্সিডিল বা মাদক পৌছে দেওয়া হয়। একই কায়দায় জনৈক রেজার নেতৃত্বে সোনাবাড়িয়া-বালিয়াডাঙ্গা সড়কের পূর্বপাশে দক্ষিণ সোনাবাড়িয়ার শেষ প্রান্তে বিল পাড়ে গড়ে উঠেছে অপর মাদক স্পট। সীমান্ত থেকে আনা ও ক্রেতার চাহিদার মাদক পৌছানোর জন্য রেজা ১৮ কিশোরকে নিয়োজিত রেখেছে বলে সুত্র জানায়। এভাবে কলারোয়ার লাঙ্গলঝাড়া, কাকডাঙ্গা, কেঁড়াগাছি, গয়ড়া, গদখালী, কোটা, বেলতলা সহ অর্ধ শতাধিক মাদক স্পট গড়ে উঠেছে। এতে করে কলারোয়ার গ্রামগঞ্জ পাড়া-মহল্লার অলিতে গলিতে ফেন্সিডিলসহ মাদক দ্রব্য পৌছে গেছে। আর মাদক এভাবে সহজলভ্য হওয়ার কারণে কিশোর ও যুবসমাজ বেপরোয়া ভাবে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। এলাকাবাসি যুব ও কিশোরদের নেশার কবল থেকে বাচাতে অবিলম্বে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছে।