শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কোনো বিবৃতিতে সই করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন উচ্চ আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (সরকার পক্ষের আইনজীবী) এমরান আহমেদ ভূঁইয়া। এর জেরে বরখাস্ত হতে পারেন এই আইনজীবী। ইতোমধ্যে এমরান আহমেদ ভূঁইয়াকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আজ মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইং ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সোমবারই আইন মন্ত্রণালয় থেকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়াকে বরখাস্তের প্রক্রিয়া শুরু করতে সলিসিটর উইংকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী বরখাস্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সলিসিটর কার্যালয়।
সূত্র বলছে, এমরানের বিরুদ্ধে অসদাচারণ, রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ আনা হতে পারে।
এর আগে, সোমবার এমরান আহমেদ ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি।’
এই আইনজীবী বলেন, ‘ড. ইউনূসের পক্ষে ১৬০ জনের বেশি নোবেল বিজয়ী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেকেই বিবৃতি দিয়েছেন যে—ওনাকে বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। সেটার বিপরীতে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে।’
এই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দাবি করে বলেন, ‘নোটিশ দেওয়া হয়েছে, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কর্মরত সবাইকে সেই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার জন্য। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই বিবৃতিতে আমি স্বাক্ষর করব না।’
অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে— এমরান আহমেদ ভূঁইয়া এমন কথা বললেও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ড. ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।’
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করা এবং বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গত মাসে খোলা চিঠি দিয়েছেন ১৬০ বিশ্বনেতা। চিঠিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি তাঁকে (ড. ইউনূস) লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করায় আমরা উদ্বিগ্ন এবং এটি তাকে বিচারিকভাবে হেনস্তা করার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া বলে আমাদের বিশ্বাস।’