সরকার পতনই বিএনপির একমাত্র চাওয়া বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, দীর্ঘ একযুগের উপরে আমরা সংগ্রাম, লড়াই করছি এই ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী, নিপীড়ন-নির্যাতনকারী সরকারের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, এই ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে মুক্তি চাই, দেশ মুক্তি চায়।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে লক্ষ্মীপুর থেকে আসা আহত নেতা-কর্মীদের এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ১৮ জুলাই লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পথযাত্রায় আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসীদের’ হামলার কৃষক দলের নিহত সজীব হোসেন এবং পুলিশের গুলিতে নেতা-কর্মীদের অনেকে আহত হয়। এর মধ্যে ছয়জন দৃষ্টি শক্তিও হারায়। লক্ষ্মীপুরের নেতা-কর্মীদের সাথে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান সহমর্মিতা প্রকাশ করতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। লন্ডন থেকে স্কাইপে তাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অত্যাচার-নিপিড়ন থেকে মুক্তি পেতে ইতোমধ্যে অনেকে প্রাণ দিয়েছেন, সাধারণ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, অনেক মানুষ গুম হয়ে গেছেন এবং সর্বশেষ এই ১৮ জুলাই আপনারা (লক্ষ্মীপুরের নেতা-কর্মীরা) শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলেন, সেই মিছিলে পুলিশ সরাসরি গুলি করে আমাদের ভাই সজীব হোসেনের প্রাণ কড়ে নিয়েছে। এখন একটাই চাওয়া, একটাই পথ, সেটা হচ্ছে এদেরকে সরাতে হবে, এদের পতন ঘটাতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এই দেশ নিরাপদ না, কেউই নিরাপদ না। আমাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, অস্তিত্ব ফিরে পাবার জন্য এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। যারা মারা গেছে তাদের পরিবারই বুঝে যন্ত্রণা ও কষ্ট, এই ত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না।
বিএনপির চলমান আন্দোলনে দেশের মানুষ সাথে আছে বলে উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ জীবন দিয়ে রাস্তায় নেমেছে। রাস্তায় নেমে এই সরকারকে সরানোর জন্য সংগ্রাম শুরু করেছে। বিশ্বাস করি যে, এই সরকারকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরাবে এবং জনগণের যে সরকার, সেই সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
দলের পক্ষ থেকে নিহত সজীব হোসেনের পরিবার ও আহতদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয় অনুষ্ঠানে।
লক্ষ্মীপুরের সাবেক সংসদ ও দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সভাপতিত্বে ও শাহাবুদ্দিন সাবুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, পুলিশের গুলিতে দৃষ্টি শক্তি হারানো যুবদল কর্মী মোস্তফা কামাল, শ্রমিক দলের ইকবাল হোসেন, কৃষক দলের বোরহান উদ্দিন, নিহত সজীবের বাবা আবু তাহের প্রমুখ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, বিএলডিপি‘র মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।