আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার নলতা হাইস্কুলে জন্মদিনের কেক কাটাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মারধর, ১ জনের মৃত্যু, এলাকা রণক্ষেত্র, প্রধান শিক্ষকসহ আটক ২।
স্কুলের শিক্ষার্থী ও রাজপ্রতাপের বন্ধু আল-রাফি, মুশফিকুর ও জুবায়ের সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষক অবকাশ চন্দ্রসহ অন্যান্য শিক্ষকদের মারপিটে অসুস্থ হয় এবং বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে পরে নলতা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় আমিনুর রহমান জানান, তার কানে এমনভাবে চর কিল ঘুষি মেরেছে, যে সে বাড়ি ফিরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বন্ধুর জন্মদিনের কেক কেটে টিকটক করার অভিযোগে শিক্ষকের চড় থাপ্পড়ের পর রাজ প্রতাপ দাস নামে নবম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা স্কুলে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আরও সাতটি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ দুই শিক্ষককে আটক করেছে।
নলতার স্থানীয় ব্যবসায়ী ইকবাল জানান জানান, বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে স্কুলের ছাদে কেক কাটে রাজ প্রতাপ দাসসহ তার কয়েকজন বন্ধু। এসময় তারা টিকটক ভিডিও করছিল। বিষয়টি নজরে পড়ে সহকারী শিক্ষক অবকাশ খাঁর। তিনি এগিয়ে গিয়ে সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিষেধ করলে শিক্ষার্থীরা তার সাথে তর্কে জড়ায়। এসময় তিনি তাদের চড় কিল ঘুষি মারেন। এর পরপরই বাড়ি চলে যায় প্রতাপসহ তার বন্ধুরা।
প্রতাপের কাকীমা তাপসী দাশ জানান, প্রতাপ স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে টয়লেটে যায়। সেখান থেকে সে বমি করতে করতে বের হয়। তখন সে পরিবারের সদস্যদের তাকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে বলে। তাকে নিয়ে চিকিৎসকের উদ্দেশ্যে রওনা হলে পথেই মৃত্যু হয় তার।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ শিক্ষকদের উদ্বৃতি দিয়ে জানান, নলতা হাইস্কুলের এক্সটেনশন ভবনে কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী তাদের এক বন্ধুর জন্মদিনের কেক কাটছিল। স্কুলের শিক্ষকরা বিষয়টি জানতে পেরে তাদেরকে বকাঝকা ও চড় থাপ্পড় মারে এবং তাদের অভিভাবকদের জানায়।
এদিকে, প্রতাপের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার সহপাঠীসহ এলাকাবাসী বাড়ি থেকে মরদেহ নিয়ে স্কুল চত্বরে ফিরে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভে অংশ নেয়। তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের রুমসহ বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করে। সাতটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের পাশাপাশি পুড়িয়ে দেওয়া হয় একটি মোটরসাইকেল। খবর পেয়ে কালিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খায়। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এখনো সেখানে মরদেহ নিয়ে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করছে।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান জানান, ইতোমধ্যে দুইজন শিক্ষককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।