![InShot_20230716_163940963](https://banglaexpressonline.com/wp-content/uploads/2023/07/InShot_20230716_163940963.jpg)
গনতন্ত্র, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের কাছে স্মারকলিপি শেষে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহন যোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। বর্তমান সরকারের অধীনে জাতীয় বা স্থানীয় কোন নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়নি। একদলীয় সরকারের অধীনে একদলীয় নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন রাবার ষ্টাম্পের ভুমিকা পালন করছে।
তিনি আজ (রবিবার) বেলা ৩টায় গুলশানের ৮৪নং রোডের ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্যালয়ে লেবার পার্টির ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদলের স্মারকলিপি প্রদান শেষে সাংবাদিকদের সাথে একথা বলেন।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন লেবার পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ আলী, হিন্দুরত্ম রামকৃষ্ণ সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক খোন্দকার মিরাজুল ইসলাম ও মেজবাউল ইসলাম সজিব।
স্মারকলিপিতে লেবার পার্টি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে কোন দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয় নাই। তাই ১৯৯৬ সালে সকল দলের ঐক্যমতে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৯ সালে ৩টি নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। যার ফলে বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে পর পর ৩ বার একদলীয় কায়দায় অগ্রহণযোগ্য ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায়কে উপেক্ষা করে ক্ষমতা কুক্ষীগত করে আছে। উল্লেখ্য ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ইউরোপিয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা সমূহ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো থেকে বিরত থাকে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পূনঃপ্রতিষ্ঠা একান্ত প্রয়োজন।
বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সভা সমাবেশ, মিছিল মিটিং এর মাধ্যমে তাদের মত প্রকাশে বাধা প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশী রায় প্রদান করে দেশান্তরী করা হয়েছে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দিয়ে রাজনৈতিক ভাবে হয়রাণী করা হচ্ছে। দ্বিতীয় বৃহত্তর দল জামায়াতে ইসলামী’র আমীর ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ারসহ অসংখ্য নেতাকর্মী হয়রাণীমূলক মামলায় কারাবন্দি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিরোধীদল নিমূর্লের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। বিগত ১৫ বছরে অসংখ্য গুম—খুন, ৪০ লক্ষাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী মত দমন অব্যাহত রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহীনিকে গণতন্ত্র নিমূর্ল, মানবাধিকার লংঘন, গুম—খুন সহ বিচার বর্হিভূত কর্মকান্ডে ব্যবহার হচ্ছে। পুলিশ ও র্যাবের ৭ ঊর্ধতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রদান ও ভিসা নীতির ফলে তা প্রতীয়মান হয়েছে।
লেবার পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করেছে। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমশিন সহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকার প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অর্থপাচারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করা হয়েছে। দলীয় লোকদের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে জনগণের ন্যায় বিচার কেড়ে নিয়েছে। বিচারপতিরা ন্যায় বিচার করতে পারছে না, যার প্রমাণ সাবেক প্রধান বিচারপতি এস.কে সিনহা। তাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিপিড়নের মাধ্যমে জোরপূর্বক যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত করা হয়েছে। বিচারহীনতার কারেণ জনমনে আইন ও বিচার ব্যস্থার প্রতি অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। যা গণতন্ত্র বিকাশে প্রধান অন্তরায়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি