নিজ দলের এমপি মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনলেন উপজেলা চেয়ারম্যান হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান।
শুক্রবার বিকালে হরিরামপুর উপজেলা চত্বরে উন্মুক্ত সংবাদ সম্মেলনে নিজ দলের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনেন মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান।
সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এমপি হিসেবে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ও হরিরামপুরে একটি বালুমহাল ইজারাকে কেন্দ্র করে এমপি মমতাজ বেগম ও তার অনুসারীরা তার উপর নাখোশ হয়েছে। এরই জের ধরে হরিরামপুরে তার অনুসারী আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেছেন। ওই সব মামলায় তার ছেলেকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ বালুমহাল ইজারা নিতে এমপি মমতাজ বেগমের তার পিএসকে দিয়ে টেন্ডার দাখিল করেন। কিন্তু বালুমহালটি না পেয়ে মমতাজ বেগম ও তার অনুসারী ক্ষিপ্ত হয়েছেন। এরপর থেকে এমপি মমতাজ বেগম বালুমহালটি বাতিল চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাধারণ শাখা-২ এর কাছে গত ১১ মে একটি ডিও লেটার পাঠান। ওই ডিও লেটারের প্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাধারণ শাখা-২ সহকারী সচিব মো. জসিম উদ্দিন পাটোয়ারি গত ১৮ মে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে একটি পত্র পাঠান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, জেলা প্রশাসকের পাঠানো পর বিষয়টি তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করে। বালুমহাল বন্ধের কোনো ধরনের হেতু নেই মর্মে ওই প্রতিবেদনের উল্লেখ্য করা হয়।
শুক্রবার বিকালের সংবাদ সম্মেলনে হরিরামপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতি ঘটেছে বলে দাবি করে দেওয়ান সাইদুর রহমান আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা অবনতির জন্য নেপথ্যে রয়েছেন এমপি মমতাজ বেগম এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এছাড়া তিনি এমপি মমতাজের বিরুদ্ধে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের দলে ভেড়ানোর অভিযোগ তুলে ধরেন।
সম্প্রতি এমপি মমতাজ বেগমের অনুসারীদের হাতে আহত ধুলশুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী কালাম বলেন, উপজেলা চত্বরে আসামাত্র এমপি অনুসারী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমানের নেতৃত্ব ১৫-২০ জন তাকে রক্তাক্ত করেছে। এর পর থানায় নিয়ে পুলিশের সামনেই পুনরায় মারধর করা হয়। হামলায় আহত হলাম, আবার আমাকেই মামলার আসামি করা হলো। আমার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লিয়াকত আলী, বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আওলাদ হোসেন, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হায়দার আলী তারেক, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাশার সবুজ, বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদুর রহমান ফরিদসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।