আব্দুল্লাহ আল শাহীন, ইউএইঃ অদৃশ্য জীবাণুর প্রভাবে ফ্লাইট বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে আটকা পড়েছেন হাজারো আমিরাত প্রবাসী। দেশ থেকে আমিরাত ফিরতে অপেক্ষার প্রহর গুনছে আটকে পড়া এসব প্রবাসীরা।
মাস তিনেক থেকে বাংলাদেশের সাথে আকাশপথের স্বাভাবিক ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। কিছু কিছু বিশেষ ফ্লাইট দুবাই থেকে ঢাকা গেলেও এখনো দেশ থেকে কোন ফ্লাইট আমিরাতে আসেনি। বিশেষ ফ্লাইটে ভিজিট ভিসায় এসে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা চড়া দামে টিকিট ক্রয় করে দেশে ফেরত যাচ্ছেন। এসব বিশেষ ফ্লাইটের মাত্রাতিরিক্ত টিকিটের মূল্য নিয়েও প্রবাসীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিক ফ্লাইট চালু হলে টিকিটের মাত্রাতিরিক্ত দাম কমবে বলে প্রবাসীরা মনে করছে।
বাংলাদেশে আটকা পড়া ফেনি জেলার মোহাম্মদ করিম বাংলা এক্সপ্রেসকে টেলিফোনে জানান, ‘বিগত ৪ মাস থেকে দেশে আসছি যাওয়ার সময় অতিক্রম হয়ে গেলেও ফ্লাইটের জন্য যেতে পারছি না। এভাবে বেকার ৪ মাস অতিবাহিত করার ফলে আর্থিক সমস্যা দেখে দিয়েছে। দুবাইয়ের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে, কর্মস্থলে স্বাভাবিক কাজ শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে দুবাই ফেরত যাওয়া আমার জন্য জরুরি।’
একইভাবে সিলেটের শাহজাহান মিয়া জানান, ‘দেশে বেকার অবস্থায় দিনযাপন করা কঠিন। আমিরাতের সাথে ফ্লাইট চালুর ব্যাপারে সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমার মতো হাজারো প্রবাসীর পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করতে হবে।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বিগত দুই সপ্তাহ থেকে আক্রান্তের সংখ্যার চেয়ে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বেশি। এছাড়া বানিজ্যিক রাজধানী দুবাইয়ে সকল সরকারি-বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শতভাগ জনবল নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। অন্যান্য শহরগুলোতেও ৫০ শতাংশ জনবল নিয়ে ব্যবসা বানিজ্য চলছে। বড় বড় শপিং মলসহ দর্শনীয় স্থানগুলো খুলতে শুরু করছে।
এদিকে বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া প্রবাসীদের মধ্যে ২ লাখ প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনতে আমিরাত সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। যার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন শুরু হয়েছে। দেশে আটকে পড়া বাংলাদেশি প্রবাসীরা রেজিষ্ট্রেশন করেছেন অনেকে অনুমতিও পেয়েছে কিন্তু ফ্লাইট চালু না হওয়ায় আসাটা প্রায় অনিশ্চিত। কারণ, আমিরাত সরকার জানিয়েছে অনুমতি প্রাপ্ত প্রবাসীরা ২১ দিনের মধ্যে আমিরাত প্রবেশ করতে হবে। ফ্লাইট না থাকায় ২১ দিনের মধ্যে বাংলাদেশি প্রবাসীরা আসতে পারবে কি না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
যদিও আমিরাতের তিনটি বিখ্যাত এয়ারলাইনস বাংলাদেশের সাথে ফ্লাইট চালুর জন্য আবেদন জানিয়েছে। ঢাকা অনুমতি দিলে শীঘ্রই চালু হবে এসব এয়ারলাইনসের ফ্লাইট। আগামী ২১ জুন থেকে এমিরেটসের ঢাকা থেকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেলেও কি রকমের যাত্রী আনা হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়।