বাংলাদেশ ও মরিশাস নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা ও বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো অন্বেষণে পর্যটন, শিক্ষা, কৃষি, যোগাযোগ, কানেক্টিভিটি ও আইসিটি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
বঙ্গভবনে শনিবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃথ্বীরাজ সিং রূপনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তারা এ মতামত জানান।
বৈঠকের পর রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, বৈঠকে উভয় রাষ্ট্রপ্রধান ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দুই দেশের সম্ভাবনাময় খাতে যৌথ বিনিয়োগের ওপর জোর দেন।
ষষ্ঠ ভারত মহাসাগর সম্মেলনে যোগদানের জন্য তিন দিনের সফরে ঢাকায় রয়েছেন পৃথ্বীরাজ সিং রূপন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকে তিনি ভারত মহাসাগরীয় রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) অধীনে পর্যটন, মৎস্য ও মহাসাগরীয় অর্থনীতি সহযোগিতার এ তিনটি ক্লাস্টার ক্ষেত্র একসঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দিয়েছেন।
এছাড়া বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং বাংলাদেশে হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মরিশাসের প্রেসিডেন্ট।
পৃথ্বীরাজ সিং রূপন নিজের প্রথম বাংলাদেশ সফরে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যে দীর্ঘদিনের চমৎকার সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। তিনি সাম্প্রতিক উচ্চপর্যায়ের সফরের উদ্ধৃতি দিয়ে সম্পর্ক জোরদারে সংযোগ, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং অর্থনৈতিক ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি সহযোগিতামূলক পদ্ধতির কথা তুলে ধরেন।
প্রেসিডেন্ট রূপন সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। মরিশাসকে একটি বহু-জাতি সমাজ উল্লেখ করে তিনি মরিশাসে বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
মরিশাসের প্রেসিডেন্টকে আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধির বিষয়ে অবহিত করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ মর্যাদা অর্জন করেছে। ‘রূপকল্প ২০৪১’-এর পর সরকার এখন ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে।
রাষ্ট্রপতি মরিশাসে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেখভালের জন্য মরিশাস সরকারকে ধন্যবাদ জানান। রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন রোহিঙ্গা ইস্যুতে ধারাবাহিক সমর্থনের জন্য মরিশাস সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মরিশাসকে বাংলাদেশ থেকে কার্গো ভেসেলসহ জাহাজ আমদানির আহ্বান জানান। তিনি সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কৃষি, শিক্ষা ও আইটি খাতে আরও উচ্চপর্যায়ের সফর, বিমান যোগাযোগ এবং প্রশিক্ষণ বিনিময়ের ওপর জোর দেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে পোর্ট লুইসের একটি রাস্তার নামকরণের জন্য রাষ্ট্রপ্রধান মরিশাস সরকারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা রাষ্ট্রপতি ভবনে ফুলের তোড়া দিয়ে মরিশাসের প্রসিডেন্ট ও তার স্ত্রী সংযুক্তা রূপনকে স্বাগত জানান।