গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সেইসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্রও জামা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কয়েকজন সমর্থকসহ নিজে উপস্থিতি থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন জাহাঙ্গীর আলম। বিকেল ৩টার দিকে মেয়র পদে মা জায়েদা খাতুনের নামে সংগ্রহ করা মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।
এর আগে বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে গাজীপুর শহরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে স্থাপিত নির্বাচনের রিটানিং অফিসারের কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র দুটি সংগ্রহ করা হয়।
গত নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় তার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি ছিল অনেকটাই ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য। তার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বিষয়টি মুহূর্তেই মহানগরের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এটি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়। তিনি এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমি মেয়র হিসেবে তিন বছরে মহানগরের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি, যা এ পর্যন্ত কেউ করতে পারেনি। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও মহানগরের জনগণের আমার প্রতি বিপুল সমর্থন রয়েছে। তাদের ভালোবাসা ও আগ্রহের কারণে আমি এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আশা করি গত নির্বাচনের মতো এবারও জনগণ বিপুল ভোটে আমাকে বিজয়ী করবেন। তিনি মহানগরের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জাহাঙ্গীর আলমের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার সৃষ্টি করে। যেখানে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ লোক শহীদ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করতে শোনা যায় জাহাঙ্গীর আলমকে। বিতর্কিত ওই অডিও বক্তব্য সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে বেশকিছু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ নভেম্বর তাকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওই সময় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় মামলাও হয়।
পরে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারও করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। বহিষ্কৃতদের ক্ষমা করে দেওয়ার বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্ষমা চাওয়ায় প্রায় এক বছর তিন মাস পর গত ১ জানুয়ারি এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। তবে কিছু শর্ত মানার বাধ্যবাধকতাও দেওয়া হয়েছে।