আট বছর আগে মিসরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে বিমান লিজ নেওয়াসংক্রান্ত দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় বিমান বাংলাদেশের সাবেক ও বর্তমান ১৭ কর্মকর্তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তিন সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের মামলায় ১৭ জন আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করলে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের দ্বৈত বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও আসিফ হাসান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এআরএম হাসানুজ্জামান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে মিসরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর মডেলের দুটি বিমান লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বছর পার হতে না হতেই বিমান দুটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। ইঞ্জিনগুলো ১২-১৫ বছরের পুরোনো। ইঞ্জিন বিকল হওয়ার পর সেগুলোকে সচল করতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় সেটিও। এতে পাঁচ বছরে দেশের ক্ষতি হয় ১১০০ কোটি টাকা, যা একাদশ জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তদন্তে উঠে আসে।
গত বছর ২৮মে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইওর কাছে লিজসংক্রান্ত নথি তলব করে দুদক। পরে এ অভিযোগের অনুসন্ধানের জন্য একটি অনুসন্ধান টিমও গঠন করা হয়। অনুসন্ধানে লিজসংক্রান্ত গুরুতর অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পায় সংস্থাটি। এর ভিত্তিতে ৬ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির ঢাকার সমন্বিত কার্যালয়ে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক জেসমিন আক্তার।
মামলার আসামিরা হলেন বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট অপারেশন্সের পরিচালক ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ, ডেপুটি ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল আলম সিদ্দিক, মহাব্যবস্থাপক আব্দুর রহমান ফুকই, সাবেক মুখ্য প্রকৌশলী শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফি, সাবেক মুখ্য প্রকৌশলী দেবেশ চৌধুরী, এয়ারওরথিনেস কনসালটেন্ট (সিএএবি) গোলাম সারওয়ার, প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম ভূঞা, ডিজিএম কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী এআরএম কায়সার জামান, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার শরীফ রুহুল কুদ্দুস, ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম শামিম, জিয়া আহমেদ, চিফ পার্সার কাজী মোসাদ্দেক আলী, ফ্লাইট পার্সার শহিদুল্লাহ কায়সার ডিউক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আজাদ রহমান, ব্যবস্থাপক আব্দুল কাদির, উপপ্রধান প্রকৌশলী শাহজাহান, ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক ফজলুল হক বসুনিয়া, ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান, চিফ পার্সার মোহাম্মদ সাজ্জাদ উল হক, ফ্লাইট পার্সার শাহনাজ বেগম ঝর্ণা ও চিফ ইঞ্জিনিয়ার গাজী মাহমুদ ইকবাল।