বিএনপির নিখোঁজ এক নেতার বোনের বাড়িতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের যাওয়ার ঘটনা পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানত না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, তবে সেখানে তার নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি ছিল না।
মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইন শৃঙ্খলা’ সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির ষষ্ঠ সভাশেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রদূত তেজগাঁওয়ের তেজকুনিপাড়ার শাহিনবাগে বিএনপির এক নিখোঁজ নেতার বোনের বাড়িতে গিয়েছেন। সে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জানার কথা ছিল। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানে না, আমরাও জানি না। তবে সেখানে তার নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি ছিল না। পুলিশ বাহিনী যখনই শুনেছে, তখনই সেখানে ছুটে গেছে।’
‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিষয়টি নিয়ে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এরপর আমার আর ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। তবে যেহেতু আমার নির্বাচনী এলাকা; আমি সে এলাকার এমপি; আমি যতটুকু খবর পেয়েছি সেখানে দেখা গেছে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত যে বাড়িতে গেছেন, তার পাশের বাড়ির কয়েকজন কিভাবে এ খবর জেনেছে আমি জানি না,’ বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘প্রথম কথা হলো সেখানে তার নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি ছিল না। পুলিশ বাহিনী যখনই শুনেছে, তখনই সেখানে ছুটে গেছে। যখনই শুনেছে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সেখানে যাচ্ছেন, তখন পুলিশ বাহিনীর কর্তব্য হয়ে গিয়েছিল সেখানে যাওয়া। আমাদের ওসি সিভিল পোশাকেই চলে গেছে। এখানে তার নিরাপত্তার ঘাটতি হয়েছে বলে আমার কাছে রিপোর্ট আসেনি।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত সেখানে যাচ্ছেন সে তথ্যটা কীভাবে ফাঁস হলো জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সেটা জানি না। তারাতো আমাদের কাছে তথ্য দেয়নি। কীভাবে তথ্য ফাঁস হলো; তার অফিস থেকে তথ্য ফাঁস হয়েছে কি-না; সেটা আমরা জানি না। আর এটা আমাদের জানার কথা নয়। তিনি (পিটার হাস) সেখানে যাবেন, সেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জানার কথা ছিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের পুলিশি ব্যবস্থা এতোটাই শক্ত যে আমাদের প্রতিটা ওয়ার্ডে একটি বিট পুলিশি সিস্টেম রয়েছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের ওসি সেখানে চলে গেছেন এবং তার যাতে নিরাপত্তার বিঘ্ন না ঘটে সে ব্যবস্থা তিনি করেছেন।
কূটনীতিক পুলিশ থাকা সত্ত্বেও এরকম একটি বিষয় কীভাবে হলো জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, কূটনীতিক পুলিশ তার সাথে ছিল। সেখানে কোনো ঘটনা ঘটেনি। রাষ্ট্রদূতরা যে এলাকায় থাকেন, সেখানে যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি তারা যখন বের হন, তখনও আমাদের সিকিউরিটি নিয়ে বের হন। চারজন রাষ্ট্রদূতকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেয়া হয়ে থাকে, তারমধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত একজন। তিনি যখন কোথাও যাওয়া-আসা করেন, তখন তার আগে-পরে আমাদের পুলিশ বাহিনী নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। তার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এরকম কথা আমরা কখনও শুনিনি।
হেফাজতের দাবি-দাওয়া নিয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, দাবি-দাওয়াতো আপনাদের (সাংবাদিকদের) জানার কথা নয়। প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে সন্তুষ্ট করেছেন। তাদের আলাপ আলোচনার মাধ্যমে জানিয়েছেন, তাদের দাবি-দাওয়া যেগুলো যৌক্তিক সেগুলো তিনি অবশ্যই দেখবেন, সেগুলো করে দেবেন আর যেগুলো একটু সময় লাগবে, সেগুলো তিনি নজরে আনবেন।