মোহাম্মদ মিলন আকতার, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও জেলা দেশের উত্তরের কৃষি নির্ভর একটি জেলা। আমন নিয়ে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকেরা। চারিদিকে সবজু-সোনালী ফসলের মাঠ। ইতি মধ্যেই আমন ঘরে উঠছে কৃষকের। অনেক স্থানে আগাম জাতের ধান কেটে ফেলেছেন কৃষক। অনুকুল আবহাওয়া, সময় উপযোগি বৃষ্টি, জলাবদ্ধতার অবসান এবং কৃষি অফিসের নিয়মিত পরামর্শ, তদারকির কারণে ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকেরা আমনে খুব ভাল একটা অবস্থায় রয়েছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে এবছর আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে ধারানা করছে কৃষি বিভাগ। তাই জেলার কৃষকেরা আমনে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায় কিছু স্থানে আগাম জাতের ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকেরা। আবার কিছু কিছু জায়গায় ধান গাছ সোনারী আকার ধারণ করেছে, আর কয়েকদিনের মধ্যেই ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন। চারা রোপনের পর পর বৃষ্টির পানির অভাবে কৃষকেরা চারা রোপন করতে পারছিলেন না। ফলে বেশ কিছু কৃষককে শ্যালোমেশিন, বরেন্দ্র গভীর নলকূপের সাহায্যে পানি দিতে দেখা যায়। কিছু এলাকায় বৃষ্টির জন্য দোয়া, ব্যাঙের বিয়ে সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করতেও দেখা যায়। পরবর্তিতে বৃষ্টির পর্যাপ্ত পানি হওয়ায় কৃষকেরা স্বস্তির ঢেকুর ফেলেন। তাই নতুন ধান ঘরে তোলার মাধ্যমে নবান্ন উৎসবের প্রস্তুতি গ্রহন করছেন জেলার কৃষকেরা।
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার, বালিয়াডাঙ্গী, রুহিয়া , পীরগঞ্জ, হরিপুর, রাণীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আমনের ধান কাটার দৃশ্য। দল বেঁধে শ্রমিকেরা আমন ধান কাটছেন। এদের মধ্যে নারী শ্রমিকদের আমনের ক্ষেতে কাজ করার দৃশ্য চোখে পড়ে বেশ কয়েক জায়গায়। জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলায়। তবে আমনে ডিজেলসহ জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষকেরা নতুন সমস্যায় পরেছিলেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৪ লাখ ২৯ হাজার ৭১৬ মেট্রিক টন। যা গত বছরে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫ হেক্টর। এর মধ্যে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন।
কৃষি বিদ্যার মতে , অন্যান্য ফসলের ন্যায় ধানের জন্যও বিখ্যাত এ জেলা। প্রচুর পরিমানে ধান এ জেলায় উৎপাদন হয়। প্রত্যেক বছরের ন্যয় এ বছরও কৃষকদের যাবতীয় কৃষি সেবা প্রদান করা হয়। বৃষ্টি, সম্পুরক সেচ ব্যবস্থা চালু ও সেচ পাম্পগুলিও সচলের মাধ্যমে পানির চাহিদা পূরণ হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু স্থানে ধান কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকেরা। বাকীগুলোও অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শুরু হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ধান উৎপাদন হবে এবং কৃষকেরা এ বছরও ধানের ন্যর্য্য মুল্য পাবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।