ভারতের বিপক্ষে হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কোনো অজুহাত দাঁড় করালেন না। ভেজা মাঠে বোলিং দলেরই বরং বেশি সমস্যা হওয়ার কথা ছিল বলে মনে করলেন, ‘যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তাতে মাঠ অবশ্যই পিচ্ছিল ছিল। সাধারণত এই ধরনের কন্ডিশনের সঙ্গে ব্যাটিং দলই সহজে মানিয়ে নিতে পারে। আমরা পারিনি। এটিকে তাই অজুহাত বানাতে চাই না। ’ তা না বানালেও পিচ্ছিল মাঠে খেলা নিয়ে বাংলাদেশ শিবিরের আড়ালের অভিযোগও গোপন থাকেনি।
দলসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, টিম ম্যানেজমেন্টের কাউকে কাউকে নাকি এ রকমও বলতে শোনা গিয়েছে যে, ‘এই মাঠে খেলা যায় নাকি?’ অবশ্য এই একটিই নয়, আড়ালের অভিযোগ আছে আরেকটিও। যেটিকে নুরুল হাসান ম্যাচের পর মিক্সড জোনে এসে ‘দুর্ভাগ্য’ বলেই চালাতে চাইলেন। আক্ষেপ করলেন খুব এই ভেবে যে ‘ফেইক থ্রো’র কারণে ভারতের পেনাল্টি হলে ৫ রান জমা হতো বাংলাদেশের সংগ্রহে।
দিনের শেষে সাকিবদের হারের ব্যবধানও তো সেই ৫ রানেরই। এই ব্যাপারটিও নুরুলের ম্যাচ জিততে না পারার দুঃখ কম বাড়াচ্ছে না, ‘ফেইক থ্রো নিয়ে মাঠে কথা হচ্ছিল। ওটি আমাদের দিকে যেতে পারত; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটি হয়নি।’ অনেক সময়ই মাঠে ফিল্ডাররা বল না ধরেও থ্রো করার ভান করেন। এতে ব্যাটারদের দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ার সুযোগ থাকে। তাঁদের সুবিধার কথা ভেবেই অনেক আগে নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে যে ‘ফেইক থ্রো’ করা যাবে না। করলে শাস্তি হিসেবে ব্যাটিং দলের সংগ্রহে ৫ রান যোগ করে দেওয়া হবে। সেই ৫ রান পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ দল কয়েক দফায় লড়াই চালিয়ে গেছে, তবে ফল পায়নি।
ঘটনাটি বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার ঠিক আগের ওভারের। সপ্তম ওভারে বোলিং করছিলেন ভারতের বাঁহাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেল। ওই ওভারে বল না ধরেই ভারতীয় এক ফিল্ডারকে থ্রো করার ভান করতে দেখেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ৫ রান পাওয়ার জন্য আম্পায়ার মারাইস এরাসমাসের কাছে ছুটে যান বলে খবর; কিন্তু সাড়া পাননি। উল্টো আম্পায়ার নাকি বলে দেন, ‘আমার চোখে তো পড়েনি। ’ তবু তা নিয়ে চেষ্টা থামায়নি বাংলাদেশ শিবির। লিটনের ব্যাটিং ঝড়ে বাংলাদেশ ৭ ওভারে বিনা উইকেটে ৬৬ রান তোলার পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হলে ড্রেসিংরুমে আরেক দফা এটি নিয়ে সোচ্চার হয় টিম ম্যানেজমেন্ট। এবার এরাসমাসের কাছে ছুটে যান খোদ বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর শ্রীধরন শ্রীরাম। দ্বিতীয় চেষ্টায়ও কাজ হয়নি। কারণ আম্পায়ারের বক্তব্য ছিল অভিন্ন। আবারো সাফ জানিয়ে দেন যে তিনি ঘটনাটি দেখেননি। একই দিনে খুব কাছে গিয়ে হারের হতাশার মধ্যেও আড়ালের দুটি অভিযোগ বাংলাদেশ শিবিরে অস্বস্তি বাড়িয়ে গেছে আরো।