বরিশাল জেলা প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ব্যাপক মাত্রায় তাণ্ডব চালিয়েছে বরিশালের গৌরনদীসহ পার্শ্ববতী এলাকায়। ঝড়ের কারণে সৃষ্ট জোয়ারের পানি ও বৃষ্টিতে তলিয়ে শত শত একর জমির পানের বরজ, আমন ধান, রবি শস্য ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে এবং বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর সংখ্যক গাছ উপড়ে যাওয়ায় অনেকের বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থরা সরকারের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলার অধিকাংশ মানুষ মাছ ও পান চাষের উপর নির্ভরশীল। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানি ও দুই দিনের অবিরাম ভাড়ি বর্ষনে ৪০০ হেক্টর জমির পান বরজ, ২২৫ হেক্টর রোপা আমনের জমি, ৩৭৫ হেক্টর শীতকালিন সবজি, ৫০ হেক্টর কলা, ২৫ হেক্টর মরিচ, ৭ হেক্টর পেঁপে ও ৬ হেক্টর বিভিন্ন শীতকালীন সবজির বীজতলার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলার কটকস্থল গ্রামের পানচাষী বাদল মাঝি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘করোনার প্রভাবে গত দুই বছর পানে তেমন কোন দাম পাই নাই। কেবল পানে একটু দাম উঠতে ছিল, হঠাৎ ঝাড়ে মোর ১২ শতাংশ জমির ১হাজার পাঁচশত পানের বর মাটির সাথে মিশে গেছে। এহন মোর সংসার কি ভাবে চলবে হ্যা মোর আল্লাই জানেথ।
গোরক্ষডোবা গ্রামের অপর পার চাষি সজিব মিয়া জানান, তার ২০ শতাংশ জমিতে দুই শতাধিক পান বরজ সিত্রাংয়ের প্রভাবে ভাড়ি বর্ষণে তলিয়ে গেছে। তাঁরাকুপি গ্রামের ইউনুস হাওলাদার জানান, তার উঠতি আমন ধানের ক্ষেত এখন পানির নিচে। অনেক চাষী তাদের শেষ সম্বল হারিয়ে নিঃশ্ব হয়ে পরেছেন। ক্ষতিগ্রস্থ চাষিরা সরকারের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
গৌরনদী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জুলফিকার হায়দার চৌধুরী বলেন, মাদারীপুর গ্রিড উপকেন্দ্র হতে গৌরনদীর ৩৩ কেভি লাইনের একাধিক স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে ও গাছ পড়ে তার ছিড়ে এবং অসংখ্য স্থানে এবং অভ্যান্তরীন লাইন ছিড়ে ও মিটার ভেঙ্গে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যহৃত হচ্ছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত উপজেলা সদরসহ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন সচল করা হলেও অধিকাংশ এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করার চেষ্টা চলছে।