খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে আসা পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গতকাল শনিবার ফুলতলার ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
রোববার, অক্টোবর ২৩, ২০২২, বিকেলে খুলনা নগরের কেডি ঘোষ রোডের বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হামলার প্রতিবাদে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম বলেন, কর্মসূচি সফল করতে তাঁরা সমাবেশের আগেই দফায় দফায় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের সহায়তা চেয়েছিলেন। পুলিশ কমিশনার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা সেই আশ্বাস অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি।
শফিকুল আলম আরও বলেন, সমাবেশ বানচাল করার প্রথমে বাস বন্ধ করা হয়েছে। পরে লঞ্চ চলাচল, ট্রলার চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। খুলনা আসার পথে নেতা-কর্মীদের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়েছে। অনেক স্থানে পুলিশও বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতারা জানান, শুধু খুলনা নগর ও জেলায় ১৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া ও তাঁদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হচ্ছে। তছনছ করা হয়েছে মৎস্য রপ্তানি প্রতিষ্ঠান আছিয়া সি ফুড। বিএনপির দুটি কার্যালয় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রেলস্টেশনে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ এনে জিআরপি থানায় এবং সংঘর্ষের অভিযোগে দৌলতপুর থানায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ বিএনপি নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মামলায় আসামি করার হুমকি দিয়েছে। খুলনা নগরের সব উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাণ্ডবলীলা চালিয়েছেন। দিনভর সশস্ত্র অবস্থায় মোটরসাইকেল মহড়া ও অশালীন, কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজ দিয়ে স্লোগান দিয়েছেন তাঁরা। সাবেক কাউন্সিলর ও নগর বিএনপির সদস্য কে এম হুমায়ুন কবিরের বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলা হয়েছে কাউন্সিলর হাফিজুর রহমানের বাসভবনেও।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোকেরা গুলি করে ফুলতলার ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশারকে গুরুতর আহত করেছেন। পাইকগাছা বিএনপির সভাপতি আবদুল মজিদ, সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, ডুমুরিয়ার সভাপতি মোল্লা মোশারফ হোসেন, দিঘলিয়ার সভাপতি সাইফুর রহমানের বাড়িতে হামলা হয়েছে। ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়েছে ফুলতলা উপজেলায়। তেরখাদা, দিঘলিয়া, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা, রূপসার সর্বত্র হামলা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আহত বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের নামের তালিকাও উপস্থাপন করা হয়। গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে খুলনা বিভাগজুড়ে চালানো পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের লোকদের সহিংসতার সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে কাল সোমবার বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানানো হয়।
রোববারের সংবাদ সম্মেলনে নগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনিরুল হাসান, নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তারিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।