রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরায়েলের কাছ থেকে সহায়তা না পেয়ে হতাশ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি। নিজে ইহুদি হলেও এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের কাছ থেকে কোনো অস্ত্র পাননি তিনি। অথচ অনেক দেশই নানাভাবে সাহায্য করছে কিয়েভকে। এ অবস্থায় প্রকাশ্যেই ইসরায়েলের ওপর হতাশার কথা জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
যুদ্ধ পরিস্থিতি উপেক্ষা করেই ইসরায়েলের পুণ্যার্থীরা পাড়ি জমিয়েছেন কিয়েভে। ইসরায়েল ও ইউক্রেনের বাসিন্দাদের মধ্যে এমন মৈত্রীর ইতিহাস বহুদিনের। কূটনৈতিকভাবে সুসম্পর্কও রয়েছে দুই রাষ্ট্রের। তবে সম্প্রতি খানিকটা ভাটা পড়েছে সেই সম্পর্কে। রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ শুরুর পর কিয়েভকে কোনো অস্ত্র সহায়তাই দেয়নি ইসরায়েল। বিশ্বের অন্যতম অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েলের এমন আচরণ নিয়ে নিয়ে প্রকাশ্যেই হতাশা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি। লাপিদ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও তুলেছেন প্রশ্ন।
ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, জানি না, ইসরায়েলের কী হয়েছে। সত্যি বলতে তাদের আচরণে আমি হতাশ। তারা আয়রণ ডোম বা অন্য কোনো অস্ত্র দেয়নি। অথচ না দেয়ার কারণও স্পষ্ট না। যুদ্ধের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও ইসরায়েলের নেতৃত্ব ইউক্রেনের সহায়তায় কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ার সুবাদে যুদ্ধে লাপিদ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বড় ধরনের সহায়তা প্রত্যাশা করেছিল কিয়েভ। এছাড়া প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির নিজেও ইহুদি হওয়ায় সে আশা বেড়েছিল আরও।
রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে ইউক্রেনকে বিপুল পরিমাণ সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা মিত্ররা। এখনও পর্যন্ত ১ হাজার কোটি ডলারের বেশি সামরিক সহায়তা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। অস্ত্র, গোলাবারুদের সাথে দিয়েছে হাইমার্সের মত অত্যাধুনিক রকেট সিস্টেমও। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকেও মিলেছে প্রায় আড়াইশ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা। কিন্তু সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে কোনো অস্ত্রসহায়তা পাঠায়নি ইসরায়েল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রুশ আগ্রাসনের সমালোচনা করলেও মস্কোর সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে বেশ সতর্ক তেল আবিব। তাই পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও সে পথে হাঁটেনি ইসরায়েল। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারকে পরাস্ত করতে রাশিয়ার সেই অবদানের প্রতি সম্মান দেখানোও এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।