জামায়াতের পাশাপাশি বিএনপিকেও পাশে চান লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। রাজধানীতে এক আলোচনায় তিনি বলেন, শুনছি আওয়ামী লীগ নাকি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচন নয়, জান বাঁচানোর প্রস্তুতি নেন। আমার পাশে জামায়াত বসে আছে। এখন যদি বিএনপি পাশে আসে তাহলে ওরা জান বাঁচানোর রাস্তা খুঁজে পাবে না। সে সময়ও আসবে। পৃথিবীতে যত স্বৈরাচার ছিল তাদের করুণ পরিণতি হয়েছে, এখানেও এদের তাই হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কর্নেল অলি আহমদ বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত না আমাদের বুঝার শক্তি হয়, ততদিন পর্যন্ত আমরা অত্যাচারিত হব। প্রথমে রাজনীতিটা সঠিক পথে আনতে হবে। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার যে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে সেগুলোকে সঠিক পথে আনতে হবে। যেসব কর্মকর্তা এই সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করেছে তাদের তালিকা করছি আমরা। তাদেরকে আগে জেলে দিতে হবে। যারা পেনশনে গিয়েছে তাদের পেনশন বাজেয়াপ্ত করতে হবে। কারণ তারা জাতীয় শত্রু।’
তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের বিরুদ্ধে এই সরকার অনেক দুর্নীতির কথা বলেছিল। কিন্তু গত ১৩ বছরে একটা মিথ্যা মামলা ছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা করতে পারেনি। যত দুর্নীতি হয়েছে গত ১৩ বছরে। সরকার মেগা প্রকল্পগুলো হাতে নিয়েছিল দুর্নীতি করার জন্য।
কর্নেল অলি আহমদ বলেন, ‘আমাদের সকলের দায়িত্ব দেশটাকে রক্ষা করা। তাই নতুন প্রজন্ম, ছাত্রছাত্রী, সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে নামতে হবে। এছাড়া অন্য কোন পথ নাই। ১৯৭১ সালে যেভাবে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করেছিলাম ঠিক সেইভাবে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে নামতে হবে’।
প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে কর্নেল অলি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে আদানির সাথে কয়েকটা চুক্তি করে এলো। এটা দিয়ে নাকি কয়েকটা পদ্মা সেতু এবং কয়েকটা টানেল বানানো যেত। তাহলে আদানিকে কি দিয়ে এলো? দেশটা আদানির কাছে বিক্রি করে দিয়ে এলো। ভারতে যারা রাজনীতি করে তাদের নির্বাচনের জন্য ফাইন্যান্স করে দিয়ে এলো আদানির মাধ্যমে। অর্থাৎ ভারতের নির্বাচনের টাকা আদানির মাধ্যমে দিয়ে এলো।
আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এবারের সফরে ভারত শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকার নিশ্চয়তা দেয়নি। আওয়ামী লীগ বুঝেছে তাদের সাথে পৃথিবীর কেউ নেই। একজন প্রতিমন্ত্রী বিমানবন্দরে রিসিভ করার পরেও প্রধানমন্ত্রীনৃত্যে অংশ নেন। তিনি কিছুই আনতে পারেননি ভারত থেকে।
মান্না বলেন, ‘সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে সমঝোতার কথা বলে আর দেশের বিরোধী দলের সাথে কেন সমঝোতা করছে না। তারা জনগণের কোনো সমস্যার সমাধান দিতে পারছে না। বিদেশের কোনো সরকার তাদের সাথে নেই। অতএব এটাই সময় সরকারকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার।
মান্না বলেন, বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। ইসলামী দলগুলোকে অনুরোধ করবো, তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলুক। আমরা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠায় একমত হয়েছি। আলোচনা আরও হবে। আশা করছি এই আলোচনা সফল হবে এবং লক্ষ্য বাস্তবায়ন হবে। ১৪ বছর ধরে একা একা আন্দোলন করে কোনো ফল আসেনি। তাই সবাইকে নিয়ে আন্দোলনে যেতে হবে। এখনই সময় আন্দোলন করার।
এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, জাগপার সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান প্রমুখ।