যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সফররত ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড.বেনজীর আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্র নাগরিক কমিটি এক সংবর্ধনা দিয়েছে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমার নিষেধাজ্ঞার পেছনে আমেরিকানরা নয় দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা দায়ী।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) জ্যাকসন হাইটসের কাছে গুলশান টেরেস মিলনায়তনে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা হিন্দাল কাদির বাপ্পা। এ সময় অন্যান্যর মধ্যে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আইজিপি বলেন, আমরা স্বাধীনতা সংগ্রাম করে বিজয়ী হয়েছি। এখন চলছে মুক্তির লড়াই। এ লড়াই অব্যাহত রয়েছে। এই লড়াইয়ে জিততেই হবে। দেশের বিরুদ্ধে, উন্নয়নের বিরুদ্ধে এবং অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা রুখে দিতে হবে।
আইজিপি বলেন, এক সময় মনে করা হয়েছিল যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাংবাদিকতায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। কিন্তু ‘বাস্তবে কী দেখছি আমরা’ এ প্রশ্ন রেখে পুলিশ প্রধান বলেন, আশা করা হয়েছিল সমাজের তথ্যচিত্রটি সবিস্তারে উঠে আসবে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে যত ভুয়া, আজগুবি তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২২ জন তথ্য সন্ত্রাসী রয়েছে। এদেরকে জবাব দিতে হবে। আপনি যে মূল্যবোধের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সেই বিশ্বাসে যদি চ্যাম্পিয়ন হন, তাহলে আপনাকেই সেটি পালন করতে হবে।
আইজিপি বলেন, তথ্য সন্ত্রাসীরা দেশের বিরুদ্ধে, তারা মানবতা বিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে। নোংরা জিনিস ফেসবুকে দেখামাত্র ফ্লাশ করা দরকার। এর বিরুদ্ধে প্রকৃত সত্যকে উপস্থাপন করতে হবে, তাহলেই মিথ্যার পরাজয় ঘটবে।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত করার চলমান লড়াইয়ে আমি সকলের সাথে রয়েছি। দেশটিকে সবার আগে রেখে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলার পথকে সুগম রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে আইজিপি বলেন, তারা অভিযোগ করেছেন যে, ২০০৯ সাল থেকে নাকি র্যাব কর্তৃক ৬০০ লোক গুম হয়েছেন। অথচ আমি র্যাবে ঢুকেছিলাম ২০১৫ সালে। তাহলে আমাকে কেন ওই তালিকায় নেয়া হয়েছে?
আইজিপি বলেন, আমি মার্কিন প্রশাসন অথবা আমেরিকানদের দোষারোপ করতে চাই না। কারণ, এটা করেছে তারাই, যারা সত্তর সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নৌকায় ভোট দেয়নি, যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল।
তিনি আরও বলেন, ওই গোষ্ঠী বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে চারটি লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছিল। সেই ভাড়াটে ফার্ম টানা তিন বছর চেষ্টা করেছে কথিত স্যাংশনের জন্যে।
আইজিপি বলেন, ২০০৯ সালে আমি এই নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি হিসেবে চাকরিতে ছিলাম। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, যে ৬০০ লোক গুমের অভিযোগ করা হয়েছে তাদের কোনো তালিকা কোথাও প্রকাশ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি’র নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে জাতিসংঘ পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে অংশ নিতে আইজিপি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন।