তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চা শ্রমিকদের ভিডিও কনফারেন্স আগামীকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। ভিডিও কনফারেন্সকে সফল করতে প্রশাসনিকভাবে সকল প্রকার প্রস্তুতি চলছে। অন্যদিকে চা শ্রমিকদের মধ্যেও এ নিয়ে নীরব উৎসব, উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে।
এদিন বিকেল ৪টায় মৌলভীবাজার জেলার চা শ্রমিকেরা কমলগঞ্জ উপজেলার ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) পাত্রখোলা চা বাগানের দলই ভ্যালি মাঠ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হবেন বলে জানা গেছে।
ভিডিও কনফারেন্সকে সফল করতে ইতিমধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা স্থান পরিদর্শন করেছেন।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ছাড়াও জেলার ৯২টি চা বাগান থেকে চা শ্রমিক ইউনিয়নের পঞ্চায়েত কমিটির নেতৃবৃন্দ, নারী শ্রমিকসহ সহস্রাধিক চা শ্রমিক অংশ নেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ভিডিও কনফারেন্সের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
ভিডিও কনফারেন্সে যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয় এ জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করাসহ কারিগরি সকল প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
চা শ্রমিকদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কারা কথা বলবেন, তাদের তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে।
জেলার সকল উপজেলার চা বাগান এলাকার অন্তত তিনটি স্থানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় পর্দায় ভিডিও কনফারেন্সটি সরাসরি দেখানো হবে। এ ছাড়া হবিগঞ্জ, সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকেও একই সঙ্গে চা শ্রমিকেরা ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হবেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-দলই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরী প্রতিবেদক’কে বলেন, ‘আগামী শনিবার বিকেলে তাদের ভ্যালি ক্লাবের মাঠ থেকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত হবেন চা শ্রমিকেরা। এ সময় অন্যান্য চা শ্রমিক প্রতিনিধিদেরও উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, ‘মোট ৪টি স্থান থেকে কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আমাদের অনেক দাবি-দাওয়া আছে। প্রশাসন থেকে কিছু নির্দেশনা আছে। নির্দেশনার আলোকে আমরা আমাদের যে কথা আছে, তা বলব।’
প্রসঙ্গত, দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে দেশের ১৬৬টি চা বাগানে চা শ্রমিকেরা কর্মবিরতির আন্দোলন শুরু করেন। চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি শেষে তারা লাগাতার কর্মবিরতির আন্দোলনে যান। পরে গত ২৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা বাগান মালিকদের বৈঠক শেষে চা শ্রমিকদের মজুরি ১৭০ টাকার ঘোষণা দেওয়া হয়।
চা শ্রমিকেরা এই ঘোষণার পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন। নতুন মজুরি নির্ধারণের পর চা শ্রমিকদের খোঁজখবর নিতে তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক করার কথা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস। এরই অংশ হিসেবে ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হচ্ছে।