মো. রাসেল ইসলাম, যশোর জেলা প্রতিনিধি: কৃষক বাবার ২২ বছরের যুবক ছেলে কবির হোসেন। পরিবারের স্বপ্ন হয়ে অভাব দূর করতে বাবার সবটুকু সম্পদ বিক্রি করে পাঠিয়েছিলেন ডুবাই। কিন্তু পরিস্থিতির সাথে কাছে হেরে গেলেন এই অসহায় কৃষক পরিবার।
জানা যায়, অসুস্থতার কারণে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়ে উঠে ডুবাই প্রবাসী কবির হোসেনের। দুটি কিডনির মধ্যে এখন একটি কিডনি বিকল ও অন্যটি প্রায় বিকলের পথে। বাবার টাকা না থাকায় চিকিৎসার অভাবে দিনে দিনে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সকাল থেকে কবির হোসেন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে কবির হোসেন। পরিবারে দুই ভাই বোনের মধ্যে বড় কবির হোসেন। পরিবারের অভাব দূর করতে ২০২১ সালের মাঝ দিকে বাবার সবটুকু চেষ্টা ও বিভিন্ন মাধ্যমে ঋণ নিয়ে পাড়ি জমায় ডুবাই। কিন্তু সেখানে কয়েকমাস যেতেই কর্মের মধ্যে বুকে প্রচুর যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকে। সেটাও পরিবারের মাঝে লুকিয়ে রেখেছেন। তাতেও শেষ রক্ষা হলো না কবির হোসেনের। সর্বশেষ কাগজপত্রের জটিলতা শেষে গত জুন মাসের ১ তারিখের ফিরে আসেন দেশে। এরপর প্রথম খুলনা সিটি মেডিকেলে চিকিংসাধীন অবস্থায় জানতে পারে কবির হোসেন একটি কিডনি বিকল হয়ে গেছে আরো একটি দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে বিকল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন অবস্থায় একদিকে পরিবারের আর্থিক দূরবস্থা অন্য দিকে সন্তানের ব্যথা সইতে না পেয়ে উন্নত চিকিৎসার ডাক্তারের পরামর্শে বর্তমান চিকিৎসাধীন আছেন শ্যামলী কিডনি হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসক জানিয়েছেন, কবির হোসেনের একটি কিডনি আগেই বিকল হয়ে গোছে এবং বাকীটাও প্রায় বিকল হওয়ার পথে। এদিকে পরিবারের সূত্রে জানা যায় এক বছর ধরে ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ মিটিয়ে এখন পরিবারটি নিঃস্ব।
কবিরের মা লিপি বেগম বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমার ছেলে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না। যন্ত্রণায় চটপট করছে আর আমার কাছে বার বার অনেক কষ্ট হচ্ছে বলছেন। ছেলের কষ্ট এখন আমিও সহ্য করতে পারতেছি না।
তার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ছেলের চিকিৎসার জন্য যা সম্বল ছিল সব বিক্রি করে দিয়েছি। মানুষের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় ৪-৫ লাখ টাকা খরচ করেছি। চিকিৎসার জন্য টাকার যোগাড় করা এখন আর সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, চিকিৎসার অভাবে ছেলেটি দিন দিন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। তাকে বাঁচাতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তার চিকিৎসার জন্য প্রশাসনসহ বিত্তশালীদের সহযোগিতা কামনা করছি। কবির হোসেন সহযোগিতা করতে বিকাশ নাম্বার – ০১৭৩২৭৭৯০৩২ ( কবিরের বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন)।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মেসবাহ উদ্দিন বলেন, সরকার দূরারোগ্য রোগে আক্রান্তদের আর্থিক সহায়তা করে আসছে। এজন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করতে হবে।