চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত শেরপুরের ফায়ার ফাইটার রমজানুল ইসলাম রনির মরদেহ আনতে হাসপাতালে টাকা দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সকালে তার মরদেহ শেরপুরের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসলে স্থানীয় সাংবাদিকদের এ অভিযোগ করেন তার ভাই এবং চাচা। তারা বলেন, আমাদের রনি দেশের জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মারা গেলেন। অথচ হাসপাতালে রনির মাসহ পরিবারের সদস্যদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। কেউ আমাদের সহযোগিতা করেনি, বরং অজ্ঞাতনামা থেকে সঠিক নাম-পরিচয়ে তালিকাবদ্ধ করতে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টাকা চেয়েছে। সর্বশেষ ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পর ডোমকেও টাকা দিতে হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ বের করতে দেরি করেছে তারা। মরদেহ প্যাঁচানোর জন্য পলিথিনটিও কিনতে হয়েছে আমাদের। এ জন্য মরদেহ হাসপাতাল থেকে বের করতে আমাদের সন্ধ্যা হয়েছে।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, এমন কোনো অভিযোগ এখনো কেউ করেনি। লাশঘরের দায়িত্বে যারা থাকে, তারা দিনরাত কাজ করছে। অনেক চাপের মধ্যে তাদের কাজ করতে হয়েছে।
এর আগে রনির লাশবাহী গাড়ি মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টায় তার শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের বালুঘাটা গ্রামে প্রবেশ করে। মরদেহ পৌঁছার পর থেকেই স্থানীয় জনগণ ভিড় করে তার বাড়িতে। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় শেরপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তারা তাকে গার্ড অব অনার ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। সকাল ১০টায় ফায়ার ফাইটার রনির রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজায় রনির আত্মীয়স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, রমজানুল ইসলাম রনি দেড় বছর আগে ফায়ার সার্ভিসে যোগ দেন। তিন মাস আগে তিনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে বদলি হন। আট মাস আগে বিয়ে করে স্ত্রী রুপাকে নিয়ে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাছেই বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। আগুনের ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের সাইরেন শুনে ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করেন রনি এবং সেখানেই বিস্ফোরণে মারা যান।