যশোর জেলা প্রতিনিধি: যশোরের শার্শা বেলতলা মৌসুমি আম বাজারে মটর শ্রমিক কল্যাণ তহবিল সংগ্রহের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। যশোর এবং সাতক্ষীরা দু জেলার সীমানা সংলগ্ন বেলতলা মৌসুমি আম বাজার হওয়ায় এ বাজার থেকে প্রতিদিন ৮০/১২০ ট্রাক আম দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগাত ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে নিয়ে যাওয়ার সময় ৮ শত থেকে ১ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয় ব্যবসায়ীদের। সরকারী ঘোষণা অনুযায়ী মহাসড়ক থেকে প্যর্ণবাহী ট্রাক লোড আনলোড’র নামে চাঁদাবাজি নিষিদ্ধ থাকলেও গায়ের জোর এবং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বাগআঁচড়া, নাভারণ, বেনাপোল শ্রমিক ইউনিয়নের স্লিপ দিয়ে এ অর্থ আদায় করে চলেছে।
জানা গেছে, কলারোয়া থানার কেরালকাতা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড কিসমত ইলিশপুর গ্রামের আজিবার মোড়লের ছেলে, মনিরুল দীর্ঘ দুই বছর আম, ও কুল মৌসুমে প্রতি ট্রাক থেকে ৮ শত থেকে ১ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। এছাড়াও তার সহযোগী হিসাবে রয়েছে একই গ্রামের কানা রাসেল, রাজ্জাক, ও করিম। মনি এবং তার সহযোগীরা বুদ্ধিমত্তার সহিত এ চাঁদা আদায় করেই চলছে।
বেলতলা বাজারে আম লোড করতে আসা একাধিক ট্রাক ড্রাইভারের সাথে ১ হাজার টাকার লোডিং স্লিপের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তাদের মুখে হতাশার ছাপ বেরিয়ে আসে, আসে নানা ক্ষোভ। চালকরা জানান, টাকা না দিলে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি হুমকি-ধামকি ও গালি গালাজ করে। আবার এমনও বলে টাকা না দিলে আর গাড়ি লোড করতে দেবে না, এসকল ভয়ে আমরা নিরুপায় হয়ে চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছি।
এ বিষয়ে মনির সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একজন শ্রমিক, আমি বাগআঁচড়া শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে ৩ বছরের জন্য ৭ লক্ষ টাকায় ডাক নিয়ে ছিলাম। কিন্তু গত কিছু দিন আগে অন্যকে দিয়ে দিয়েছি সেই চাঁদা সংগ্রহ করে।
বেলতলা বাজারের আম ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ লোকমান হোসেন বলেন, শ্রমিকদের নামে যে টাকা আদায় করা হচ্ছে এর জন্য অনেক অনুরোধ করেছি কিছু কম নেওয়ার জন্য, কিন্তু এরা কারও তোয়াক্কা করছে না।
বাগআঁচড়া (৬৬৯) নং বাগআঁচড়া, নাভারণ, ও বেনাপোল, মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান কিনা বলেন, যশোর জেলা পুলিশের এ্যডিশনাল এসপি এবং শার্শা থানার ওসি আসছিলো তাদের সাথে আলাপ আলোচনা মাধ্যমে ছোট ট্রাক ৩ শত টাকা আর বড় ট্রাক ৪ শত টাকা নির্ধাণ করে দেওয়া হয়েছিল। বেশি টাকা নিলে তার দায়ভার মনির, আর টাকা আদায়ের দায়িত্ব মনিরকে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় নাভারণ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান জানান, মহাসড়ক থেকে দালালীর নামে চাঁদাবাজি সম্পুর্ন নিষিদ্ধ। বেলতলা আম বাজারে ট্রাক লোড থেকে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে খবর পেয়ে এ্যাডিশনাল এসপি স্যারসহ আমি বেলতলা আম বাজারে গিয়ে শ্রমিক নেতাদের সাথে আলোচনা শেষে তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, একটা টাকাও শ্রমিক কল্যাণ তহবিল বা শ্রমিক ইউনিয়নের নামে চাঁদা আদায় করা যাবে না। এমন কোন ধারা শ্রমিক আইনে আমরা দেখি নাই। তিনি আরও বলেন, মনি নামের ব্যক্তিসহ তার সহযোগীরা বেলতলা আম বাজারে ট্রাক থেকে চাঁদাবাজির বিষয়টি দ্রুত খাতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্তা গ্রহণ করা হবে।