ভালো কাজ দেওয়ার কথা বলে ঝিনাইদহের দুই ব্যক্তিকে দুবাই নিয়ে সেখানকার এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ করা হয়—বর্তমানে তাঁদের একটি কক্ষে আটকে রেখে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। ঠিকমতো খাবার ও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া বাড়ি থেকে দুই লাখ করে টাকা নিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন দুবাইয়ের ওই ব্যবসায়ী।
যশোর প্রেসক্লাবে আজ রোববার সকালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ করা হয়।
‘ভুক্তভোগী’ দুই বাংলাদেশি নাগরিক হলেন—ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার ঘাঘা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে রুবেল হোসেন ও একই জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কুলুপাড়া গ্রামের হায়দার আলী মৃধার ছেলে জাহিদুল ইসলাম।
রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিণয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ‘দুই মাস আগে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের মোবারক হোসেন ওরফে শফিকুল ইসলাম নামের এক দালাল দুবাই পাঠানোর কথা বলে ওই দুই ব্যক্তির কাছ থেকে দুই লাখ করে টাকা নেন। এর মধ্যে রুবেলকে একটি শপিং মলে ৫০ হাজার টাকা বেতনে ম্যানেজার পদে এবং জাহিদুলকে একটি ওয়েল্ডিং কারখানায় ৬০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। এ দুজনের স্বজনদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর গত ১৫ মে রাইটস যশোরের কর্মকর্তারা ভয়েস কলের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা নিশ্চিত হন যে, ওই দুই ব্যক্তি পাচারের শিকার হয়েছেন এবং বর্তমানে পাচারকারী চক্রের হাতে বন্দি অবস্থায় আছেন। বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স এয়ার চ্যানেল ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে (ওমরা হজ লাইসেন্স নম্বর ৫০২) ওই দুজনকে দুবাই পাঠানো হয় বলেও জানতে পেরেছে রাইটস যশোর। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীদের উদ্ধার ও দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে রাইটস যশোরের পক্ষ থেকে বিস্তারিত জানিয়ে এর মধ্যেই দুবাইয়ে বাংলাদেশের কনসুলেট জেনারেল, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইজিপি, ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বিভিন্ন সময়ে ভারতে পাচারের শিকার পাঁচ তরুণী সেখানে বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ এ পাঁচ তরুণীকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
যশোর জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের এরিয়া কো-অর্ডিনেটর রোকেয়া পারভিন জানান, ফেরত আসা তরুণীদের যশোরে তাঁদের নিজস্ব শেল্টার হোমে রাখা হয়েছে। পরে পরিবারে সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের হস্তান্তর করা হবে।