সুজন কুমার কর্মকার, কুষ্টিয়াঃ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলমান বিরোধের জের ধরে হামলায় সিদ্দিকুর রহমান (৫০) নামের এক আওয়ামীলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। এঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে আরও ৬জন। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডীপুর পুঠিমারী বিলের চরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত সিদ্দিকুর রহমান একই এলাকার মৃত ওমর আলীর ছেলে। তিনি চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক। ঘটনায় আহতরা হলেন, একই এলাকার ইউনুস আলী (৪৫), আব্দুল খালেক (৩৫), বাদশা মন্ডল (৩০), কুব্বাত আলী (৩৬), রানা মন্ডল (৩০), সুমন আলী (৩০)। এর মধ্যে ইউনুস, বাদশা ও রানা গুলিবিদ্ধ।
স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ভোটকেন্দ্র গোলোযোগ সৃষ্টি হয়। তারপর থেকেই দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে চন্ডীপুর হান্নান মোড়ে জাসদ নেতা নজরুল ইসলাম, লুৎফর রহমানের সাথে কথা কাটাকাটি হয় আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল এর সমর্থক ওয়াসিম ও কুব্বাতের।
শুক্রবার সকালে পুটিমারির বিলের চরে ঘাষ কাটতে যায় বাদশা নামের এনামুলের সমর্থক। এসময় তার তার উপরে হামলা চালায় জাসদ নেতা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে রনি, মোনা মালিথা, ওহাব মালিথা, শান্ত মালিথাসহ বেশ কয়েকজন।
তাৎক্ষনিক এ এনামুল মেম্বারের লোকজন ছুঁটে গেলে তাদের সাথে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ ৬জন আহত হয়। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় এনামুল মেম্বারের ভাই সিদ্দিকুর রহমান।
নিহতের ভাই এনামুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাসদ নেতা নজরুলের সাথে বিরোধ। এর রেষ ধরে তারা পরিকল্পিত ভাবেই আমার ভাই ও লোকজনদের উপরে হামলা করে। সকলের সামনের নজরুলের ছেলে রনি গুলি করছিলো।”
চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপন জানান, এলাকায় মন্ডল এবং মালিথা এই দুই গ্রুপের বংশীয় দ্বন্দ্ব প্রায় ৬০ বছরের। মাঝে মাঝেই এর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটে আসছে।
ভেড়ামারা থানার (ওসি) মজিবর রহমান জানান,সকালে আধিপত্ত্য বিস্তারকে নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ সিদ্দিকুর রহমান নামের একজন মারা যান। পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত।