আবু তালহা, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: আমাগোরে গ্যাদাক কছিলাম ধান গারিস না এত খাটনি হইরা লাভনাই এহুন খ্যাত আগলা থাকে তারনেগা ধান গারতাছি। এবার সব কিছুর যে দাম বারছে তাতে ধান গেরে কোন লাভ অবোনা খালি লোকসান আর লোকসান। আমরা কৃষক মানুষ আবাদ বসত না করে কি করে খামু সবকিছুর দাম বাড়ছে খালি ধানের দাম কমছে এবার যে খরচ করতাছি তাতে চালান তোলা মুসকিল এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন কৃষক আজগর আলী।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় এবছর ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৭’শ ৭০ হেক্টর জমিতে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৭’শ ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। গতবছর চাষ হয়েছিল ৬ হাজার ৭’শ ৭০ হেক্টর।
বর্তমানে তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় জমিতে হালচাষ এবং সেচ দিতে খরচ বেশি হচ্ছে এছাড়াও কীটনাশকের দামও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসবের সাথে পাল্লা দিয়ে শ্রমিকের মজুরি হয়ে গিয়েছে দ্বিগুণ তারপরও লোকসান মাথায় রেখেই ইরি-বোরো চাষ করছেন কৃষকরা।
উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের নান্দিনা কামালিয়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম, ভদ্রঘাটের আনিসুল হক বলেন, এবার ধান রোপনে যে পরিমান খরচ হচ্ছে তাতে ধানের দাম টা যদি বৃদ্ধি পেত তাহলে কিছুটা লোকসান পুষিয়ে নিতে পারতাম। এত টাকা খরচ করছি, নিজে শ্রম দিচ্ছি তারপরে যদি লোকসান হয় তাহলে আমরা কিভাবে বাঁচব। আমাদের এই কৃষি কাজ করেই ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া সংসার চালাতে হয়। দেশের সব কিছুর দামি এখন ঊর্ধ্বমুখী এ সময় যদি আমাদের লোকসান গুনতে হয় তাহলে জীবন-জীবিকা নিয়ে পথে বসতে হবে।
তবে উপজেলার যে সকল প্রান্তিক কৃষকেরা টেন্ডারে ও বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করছেন তারা রয়েছে বেশি লোকসানের মুখে। উপজেলার ঝাঐল ইউনিয়নের বর্গাচাষী ফোরহাদ সেখ, আবু বক্কোর সেখ, ভদ্রঘাট ইউনিয়নের আলী আকবর বলেন, সবাই শুধু কৃষকদের শোষণ করে খায়। দিনরাত পরিশ্রম করে চাষাবাদ করি তার অর্ধেক আবার জমির মালিককে দিতে হয়। যেটুকু ফসল পাই পরিবার নিয়ে খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকি কৃষক মানুষ অন্য কোন কাজ করতে পারিনা। যার কারণে বাধ্য হয়েই ধান চাষ করতে হয় তা না হলে ছেলে মেয়েদের মুখে কি তুলে দিব।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত বলেন, শুধুমাত্র ডিজেল চালিত সেলো মেশিনের আওতায় কৃষিজমি গুলোর সেচ খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাল চাষের খরচ কিছুটা বেড়েছে তবে কৃষকদের লচ হবেনা। সরকার কৃষিতে প্রচুর ভর্তুকি দিচ্ছে ও কৃষকদের উৎপাদন খরচ এবং ফসলের মূল্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকদের সর্বক্ষণিক যেকোন সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এবার বোর চাষিরা ভালো ফলন পাবে বলে আশা করছি এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে।