তিমির বনিক, মৌলভীবাজার থেকে: কৃষি নির্ভর দেশ আমাদের বাংলাদেশ। চলতি আমন মৌসুমে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার খাদ্যগুদামে সরকারিভাবে ধান সংগৃহীত হয়েছে মাত্র ১৯ শতাংশ। তবে এতো কম ধান সংগ্রহের কারণ হিসাবে সরকারিভাবে ধানের মূল্য কম থাকা ও ধানের বর্তমান বাজারদরকেই লক্ষ্য প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরন হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমন মৌসুমে শুরুর দিকে ধানের প্রতি মণ ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন সপ্তাহ ধরে ধানের মণ ১ হাজার থেকে ১১শ’ টাকা করে বিক্রি করছেন তারা। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের তুলনায় স্থানীয় বাজারে বেশি দামে ধান বিক্রি করতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ ও লাভবান হবেন বলে জানান কৃষকেরা।
উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে মতে জানা যায়, উপজেলার দু’টি খাদ্য গোদামে ১১৮৭ মেট্রিকটন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তবে গতকাল ২৪ জানুয়ারী পর্যন্ত ধান সংগৃহীত হয়েছে মাত্র ২২৯ মেট্রিকটন। চলতি আমন মৌসুমের ২৯ নভেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত উপজেলায় অভ্যন্তরীণ আমন ধান ২৭ টাকা কেজি এবং চাল ৪০ টাকা কেজি দরে সংগ্রহের লক্ষ্যে মূল্য নির্ধারণ করে দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১৭ মেট্রিক টন। আর উপজেলায় সিদ্ধ চালের চাহিদা থাকায় লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে আনেন ৫১৭ মেট্রিক টন কারা হয়েছে।
কৃষক শাহিন মিয়া, বাতেন মিয়া, মানিক মিয়া বলেন, বাজারে ধানের পাইকারি বাজারে রঞ্জিত জাতের ধান ১ হাজার ৮০ টাকা এবং স্বর্না জাতের ধান ১ হাজার টাকা মণপ্রতি বিক্রি করেছি। এ ধান বিক্রি করতে আমাদের কোন যাতায়াত খরচ লাগেনি। এ ছাড়াও অনেক পাইকার বাড়ি থেকেও ধান কিনে নিয়ে যান। সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে খরচ বেড়ে যায়। আমরা সরকারি মূল্যের চেয়ে বেশি দামে স্থানীয় বাজারে ধান বিক্রি করতে পারছি। পাইকারি বাজারে ধান বিক্রি করে তিনি সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন।
কমলগঞ্জ উপজেলার বাসন্তী রাইস মিলের মালিক কানু চন্দ্র দেব জানান, বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকেরা এখনো ধান মজুত করে রেখেছেন। কৃষকেরা সরকারের দেওয়া দামের তুলনায় কেজি প্রতি ১টাকা বেশি করে আমাদের কাছে বিক্রি করতে পারছেন। আমরাও তাদের কাছ থেকে ধান সরবরাহ করছি। এতে আমাদের কোন ক্ষতি হচ্ছেনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা দীপক মন্ডল বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় ধানের যে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে এর থেকে বাজারের ধানের পাইকারি মূল্য দোকান গুলোতে কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন, যার জন্য সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে তাঁদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এ ছাড়াও সার্বিক খরচ বিবেচনা করে কৃষকেরা এলাকার বাজারে কাছাকাছি দামে বিক্রি করাই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। চালের বিষয়ে তিনি জানান, উপজেলার মিল মালিকদের সাথে চুক্তি থাকায় চাল সরবরাহ লক্ষ্যে মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এবছরে।